মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৯

[ About Lakshadweep Minicoy Island Tourism ]

SOME VALUABLE INFORMATIONS ABOUT LAKSHADWEEP MINICOY:-

           আরব সাগরের বুকে প্রবাল দিয়ে গড়া পান্নাসবুজ অসংখ্য ছোট ছোট দ্বীপের সমাহার হলো লাক্ষাদ্বীপ। এটি ভারতেরই একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ( Union Territory )। এখানে পৌছবার মাত্র দুটি উপায় আছে। একটি হলো জলপথ অর্থাৎ জাহাজ। আর একটি হলো আকাশপথ বা উড়োজাহাজ বা বিমান। কেরলের কোচি থেকে জলজাহাজ এবং বিমানের মাধ্যমে নিত্য যোগাযোগ আছে এই সুন্দর দ্বীপভূমির। জলজাহাজে যেতে হলে ১৫ - ২০ দিন আগে বুকিং করতে হবে। বিমানে সময় লাগে ১ ঘন্টা ৩০ মিনিট। জাহাজে সময় লাগে ২৪ - ৪৮ ঘন্টা। দ্বীপ অসংখ্য থাকলেও মাত্র ৩৬ টিতেই যাওয়ার অনুমতি পাওয়া যায়। এর মধ্যে মানুষের বসবাস আছে ১০টিতে। মিষ্টি জলের অভাব থাকায় বাকি ২৬টি দ্বীপে কোন জনবসতি নেই। ১২টি উপহ্রদ, ৩টি প্রবাল প্রাচীর এবং ৫টি রূপোলী রঙের ডুবন্ত বেলাভূমি আছে। লাক্ষাদ্বীপ, মিনিকয় এবং আমিনদীভে ( Lakshadweep, Minicoy and Aminidivi ) - এই দ্বীপেরই নাম আমাদের সকলের জানা। আস্তে আস্তে লাক্ষাদ্বীপ ট্যুরিজম জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

              এখানকার রাজধানী ( Capital City ) কাভারাত্তি ( Kavaratti )। বৃহত্তম শহর ( Largest City ) আনড্রোট ( Andrott )। মোট এলাকা ( Total Area ) বা আয়তন প্রায় ৩৩ বর্গকিলোমিটার। এই দ্বীপভূমিসমূহ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয় ১৯৫৬ সালের ১লা নভেম্বর। এর নামকরণ নিয়ে দ্বিমত আছে। কেউ বলেন, আগ্নেয়শিলা বা ভূমিকম্পে সৃষ্ট "এক লক্ষ দ্বীপ" - এই শব্দত্রয় থেকেই এই নামকরণ হয়েছে। আবার অনেক ঐতিহাসিকের মতে লক্ষ টাকা দিয়ে এই জায়গার দখল নেয় ব্রিটিশেরা। সেই থেকে এই নামকরণ। সে নাম যাই হোক, স্থানসমূহ এবং এখানকার মানুষেরা অসম্ভব সুন্দর। এখানকার সমাজ মাতৃতান্ত্রিক। মেয়েরাই পরিবারের প্রধান। মোট জনসংখ্যা ( Total Population ) ৬৪৪৭০। জনঘনত্ব ( Population Density ) হলো প্রতি বর্গ কি.মি.তে ২০০০ জন। সরকারি ভাষা হ'ল মালয়ালম ও ইংরেজি ( Official Main Languages )। আর দক্ষিণের মিনিকয় দ্বীপের ভাষা মাল এবং লেখার মাধ্যম দিবেহি হরফ। এই হরফের সাথে আরবি হরফের অনেক মিল আছে। হয়তো কাছের মালদ্বীপের ( Maldives ) প্রভাবই এর মূল কারণ। শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণ অবৈতনিক। সাক্ষরতার ( Percentage of Literacy ) হার ৯১.৭৫%। বেশিরভাগ মানুষই মালয়ালি ( Malayali )। বাদবাকি মাল ( Mahl ) জাতির। এরা খুবই ধার্মিক। এরা সুফি সম্প্রদায়ের, সুন্নি মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষ। খুবই সরল সাদাসিধে। সবচেয়ে তারিফের বিষয় হলো যে এই দ্বীপসমূহে কোনরকম অপরাধ সংঘটিত হয় না। প্রতি ১০০০ পুরুষে নারীর সংখ্যা ৯৪৬ ( Sex Ratio of Male and Female )। মাথাপিছু বাৎসরিক রোজগার ( Per Capita / Per Head Yearly Income ) ২৯৮০০০ টাকা।

AVERAGE WEATHER OR CLIMATE. WHEN SHOULD YOU GO THERE? / BEST TIME TO VISIT OR TRAVEL THIS STATE:-

         এখানকার আবহাওয়া নিরক্ষীয়। এখানে শীতের কোন প্রভাবই নেই। গ্রীষ্মে তাপমাত্রা ২২° থেকে ৩৫° সেলসিয়াস আর শীতে ২০° থেকে ৩২° সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করে। আদ্রতা অত্যন্ত বেশি। বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। ভ্রমণ করার আদর্শ সময় অক্টোবর থেকে এপ্রিল মাস। এখানে ঘুরতে আসতে হলে পারমিট ( Permit ) করাতে হয়।

FROM WHERE & HOW TO GET TRAVEL PERMIT EASILY?

ভ্রমণের পারমিট করাতে হবে কোচিতে অবস্থিত SPORTS ( Society For Promotion of Recreation at Tourism and Sports in Lakshadweep ) - এর সদরদপ্তর ( Head Office ) থেকে।

Note Down This Office Address :-

SPORTS, Lakshadweep Tourism, Indira Gandhi Road, Willingdon Island, Kochi - 682003, Related Website - http://www.lakshadweeptourism.com , Tel - 2668387 / 2666789. Fax - 0484 2668647.

For Ship Booking - https://www.lakport.nic.in

For Samudram Package - https://www.samudram.utl.gov.in

Govt. Official Website ( For Tourism & Other ) - https://www.lakshadweep.gov.in

ALL TOTAL LIST OF 4 VERY BIG, MOST POPULAR OR FAMOUS LOCAL FAIRS & MAJOR FESTIVALS:-

(1) Eid Ul Fitr, (2) Bakri Eid, (3) Milad Un Nabi, (4) Muharram.

এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের যেকোন জায়গায় যাওয়া আসা, থাকা খাওয়ার ব্যাপারে আগে থাকতে অনলাইন বুকিং-এর জন্য নীচের বিশ্বস্ত ওয়েবসাইটগুলির মধ্যে এক বা একাধিক ব্যবহার করতে পারেন। [ FOR ONLINE BOOKING OF FOODS / FLIGHTS, TRAIN / RAILWAY RESERVATION, HOUSES ON RENT/ FLATS RENTAL / LODGES / RESORTS / HOMESTAYS / TENTS / HOTELS ROOMS IN ANY PLACE WITH DISCOUNT, CHEAP AIR TICKETS, BUS BOOKING, CAR HIRE ]:-
1. https://www.trivago.in
2. https://www.goibibo.com
3. https://www.makemytrip.com
4. https://www.yatra.com
5. https://www.cleartrip.com
6. https://www.tripadvisor.in
7. https://www.ixigo.com
8. https://www.zomato.com

TOP PLACES TO VISIT OR MAJOR TOURIST ATTRACTIONS IN LAKSHADWEEP AND MINICOY ISLAND WITH PROPER TOUR PLAN ON MAIN TRAVEL DESTINATIONS AND OTHER NEAREST BEAUTIFUL SPOTS:-

                   এখন চওড়া রাজপথ হয়েছে। টেলিফোন, স্যাটেলাইট টেলিভিশন সহজলভ্য। ভ্রমণ মানচিত্রেও উপরের সারিতে স্থান করে নিয়েছে। লাক্ষাদ্বীপের সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত ও চন্দ্রোদয় অনবদ্য। সূর্যাস্তে সমুদ্রে সোনা রঙ ধরে। পরমুহুর্তেই অস্তগামী সূর্য সাগরে আগুন ঝরায়। চন্দ্রোদয়ে যেন আকাশ থেকে যেন শ্বেতশুভ্র অভ্র ঝরে পড়তে থাকে পুরো দ্বীপপুঞ্জ জুড়ে। শুক্লপক্ষের চাঁদনী রাতে আলোর বন্যায় স্নান করে।

মার্কোপোলোর ভ্রমণ বৃত্তান্তে আকর্ষণীয় প্রমীলা রাজ্যরূপে মিনিকয়ের উল্লেখ আছে। ক্র্যাঙ্গানোরের হিন্দু রাজা চেরামন পেরুমল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মক্কা যাওয়ার পথে সামুদ্রিক ঝড়ে দিকভ্রান্ত হয়ে বাঙ্গারাম দ্বীপে পৌঁছান। তারপর রাজা আগাতি যান। দেশে ফিরে প্রচুর লোকলস্কর পাঠান রাজা। তারা ছিলেন হিন্দু। তারপর এই দ্বীপভূমিতে হিন্দু সাম্রাজ্যের পত্তন হয়। পরে আস্তে আস্তে আবিস্কৃত হয় আগাতি, আমিনী ও অন্যান্য দ্বীপগুলি। সপ্তম শতকে জেড্ডার সুফি সাধক উবেদুল্লাহ হজরত মহম্মদের স্বপ্নাদেশ অনুসারে ইসলাম ধর্ম প্রচারে বেরিয়ে পথে জাহাজডুবিতে আমিনী দ্বীপে আশ্রয় নেন। এখানকার হিন্দুদের মধ্যে ইসলাম ধর্ম প্রচার করেন। তাই আজও এদের মধ্যে হিন্দু প্রভাব এখনও লক্ষ্য করা যায়। ১০ম শতক পর্যন্ত দক্ষিণ ভারতের শাসকদের অর্থাৎ চেরা, পান্ড্য ও চোলদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা লেগেই ছিল লাক্ষাদ্বীপের দখল নিয়ে। এই দ্বীপভূমির সমাজজীবনে আর্যদের মতোই কর্মভিত্তিক শ্রেণীভাগ রয়েছে। শ্রেণী অনুসারে এদের বসতিও আলাদা। ভূস্বামী যারা তাঁদের বলে কোয়া (Koya), যারা নাবিক তাঁরা হলেন মালমি (Malli) আর যারা কৃষিকাজ করেন তাঁরা মেলাচেরি (Melachery) নামে পরিচিত। মোট তিনটি সম্প্রদায়ে বিভক্ত এদের সমাজ। অল্প কিছুদিনের জন্য পর্তুগিজরা দখল নেয় লাক্ষার। কিন্তু, এখানকার বাসিন্দারা বিষক্রিয়ায় হত্যা করেন পর্তুগিজদের। পরে টিপু সুলতানের হাত ঘুরে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দখলে আসে। তারপর ১৯৪৭ সালে স্বাধীন ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। আর ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়।

নীল জলে ধৌত দুধ-সাদা প্রবালে গড়া লাক্ষার নৈসর্গিক সৌন্দর্য বর্তমানে ভারত তথা বিশ্বের ভ্রমণবিলাসীদের কাছে অত্যন্ত আদরণীয়। তাই ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে এই দ্বীপভূমি জাতীয় ইকো ট্যুরিজমের পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। জাতীয় স্বার্থে এই দ্বীপপুঞ্জের অধিবাসীদের স্বাধীনতা বজায় রাখতে এখানে বাইরের মানুষ যাতায়াতে বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। আগে থেকে সরকারি অনুমতি নেওয়া থাকলে তবেই এখানে ঘুরতে যেতে পারবেন। আপনি ভারতীয় হলে Travel Permit পাওয়ার জন্য পুরো নাম, ঠিকানা, জীবিকা, জন্ম তারিখ ও কোন্ কোন্ স্থানে যাবেন তা আগে থেকে জানিয়ে আবেদন করুন এই ঠিকানায় - The Assistant General Manager ( SPORTS ), Lakshadweep Tourism, Indira Gandhi Road, Willingdon Island, Kochi - 682003, Tel No. - (0484) 2668387/2666789, Fax - 0484 2668647. আর বিদেশিদের জন্য ( For Foreigners ) আবেদনের ঠিকানা হলো - Liaison Officer, Lakshadweep, 202 Kasturba Gandhi Road, New Delhi - 110001. নিজেদের নাম, ঠিকানা, নাগরিকত্ব, পাসপোর্ট নম্বর, ইস্যু তারিখ, সময়সীমা, জীবিকা, জন্ম তারিখ ও ভ্রমণস্থলগুলির নাম জানিয়ে বিদেশী পর্যটকেরা আবেদন করবেন।

কোথায় থাকবেন? Where to Stay?

          পর্যটকদের থাকার জন্য এখানে সরকারি ব্যবস্থাপনায় Tourist Hut তৈরি হয়েছে কাভারাত্তি, বাঙ্গারাম, আগাতি ও কদমাত দ্বীপে। SPORTS-এর গেস্ট হাউস আছে কাভারাত্তি ও কদমাত দ্বীপে। কয়েকটি বিচ রিসর্ট হয়েছে কালপেনি, মিনিকয় ও কাভারাত্তি দ্বীপে। কদমাতে আছে হনিমুন রিসর্ট ও ইউথ হোস্টেল। PWD বাংলো রয়েছে মিনিকয় ও কাভারাত্তিতে। কেবলমাত্র বাঙ্গারাম দ্বীপ ছাড়া সমস্ত লাক্ষাদ্বীপে মদ্যপান পুরোপুরি নিষিদ্ধ।

ভ্রমণ পরিকল্পনা / Tour Plan / How Do You Travel Lakshadweep and Minicoy Indian Territory Islands?

                    বেশ কয়েক বছর ধরে SPORTS Authority অক্টোবর থেকে মে মাস পর্যন্ত কোচি থেকে ৮ রকমের প্যাকেজ ট্যুরের লাক্ষা ঘোরার ব্যবস্থা করে চলেছেন। এদের প্যাকেজ যাত্রায় আলাদা করে ভ্রমণের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হল -

(ক) ৫ দিনের Lakshadweep Samudra Package - এ Kavaratti, Kalpeni, Kadmath, Minicoy ট্যুরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে MV Kavaratti-তে করে।

(খ) ৬/৭ দিনের Swaying Palm Package-এ থাকা-খাওয়া ও যাতায়াতসহ Minicoy ঘুরিয়ে আনা হচ্ছে।

(গ) ৪ থেকে ৭ দিনের Marine Wealth Awareness Programme - এ হাইস্পিড ক্রাফটে করে Kadmat ঘুরিয়ে আনা হচ্ছে।

(ঘ) ৪ অথবা ৫ দিনের Taratashi Package - এ হাইস্পিড ক্রাফটে করে Kavaratti ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হয়।

কোচি-লাক্ষা-কোচি যাতায়াত, অবস্থান, আহার্য, দ্বীপ থেকে দ্বীপে ঘুরে বেড়ানোর বোট ইত্যাদি সবকিছুর খরচ ধরা থাকে প্যাকেজ ভাড়ার মধ্যে। আপনার উচিত হবে এক নম্বর প্যাকেজ অর্থাৎ Coral Reef - এ অংশগ্রহণ করে মিনিকয়, কাভারাত্তি, কালপেনি দ্বীপগুলি ঘুরে নেওয়া। ভারতীয়দের এই তিনটির সাথে কদমাত ও আনদ্রোত দ্বীপে প্রবেশেরও অনুমতি মেলে। আর বিদেশী পর্যটকেরা কেবলমাত্র বাঙ্গারাম দ্বীপেই প্রবেশ করতে পারবেন। প্যাকেজ যাত্রীদের উচিত হবে হালকা হয়ে জাহাজে চড়া। জাহাজের ট্যুরিস্ট ক্লাস বলতে বোঝায় শীততাপ নিয়ন্ত্রিত হলে পুশব্যাক চেয়ারে করে যাত্রা করা। হলে টেলিভিশন আছে। কমন বাথরুমের ব্যবস্থা। আর ফার্স্ট ক্লাসে রয়েছে ৪ বার্থের সুসজ্জিত সরু কেবিন। খাওয়ার মেনু দুই শ্রেণীতেই একই। হনিমুনের নবদম্পতিদের জন্য ২ টি ২ বার্থের ডিলাক্স কেবিন থাকে প্রত্যেকটি জলযানে।

প্যাকেজ ট্যুরের আঞ্চলিক প্রতিনিধি ( Regional Travel Agents For Booking of Package Tour Programmes ) -

কলকাতায় Contact করুন (1) Krish Tours and Travels, Vaisno Chamber, 6 Brabourne Road, Kolkata - 700001.
(2) Diamond Tours and Travels, 30 Jadunath Dey Road, Kolkata - 700012.

দিল্লিতে যোগাযোগ করুন (1) F - 301, Curzon Road Hostel, Kasturba Gandhi Marg, New Delhi - 110001.

মুম্বাইয়ের ঠিকানা হলো (1) Lakshadweep Travelinks, Passport Studio, Jermahal, 1st Floor, Dhobi Talao, Mumbai - 400002.

এছাড়া, ম্যাঙ্গালোরের Glove International Travels, কোচির Lakshadweep Tours, Island Tour and Travels, Lagoon Travels ইত্যাদি ট্যুর এজেন্সির মাধ্যমে সামান্য চার্জের বিনিময়ে পছন্দমতো প্যাকেজের টিকিট বুকিং করে নিতে পারেন। আবার ৫০% অগ্রিম টাকা  Money Order / Bank Draft-এর মাধ্যমে SPORTS-এর কোচির অফিসের ঠিকানায় আবেদনপত্র সহযোগে পাঠিয়ে সরাসরিও টিকিট বুকিং করতে পারেন। এক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জের টাকাটা সাশ্রয় হবে।

দিনকে দিন প্যাকেজ ট্যুরের চাহিদা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এর মুখ্য কারণ হলো দুটি। এক, আলাদা করে বিশেষ অনুমতি পাওয়ার ঝামেলা থেকে রেহাই পাওয়া। আর দুই, নিশ্চিন্তে ভ্রমণ করার মজা উপভোগ করতে পারা। থাকা-খাওয়া থেকে আরম্ভ করে সবকিছুর দায়িত্ব ট্যুর অপারেটরদের। এনাদের ব্যবস্থাপনা সত্যিই অনবদ্য। আরও ভালো এঁদের জাহাজে করে এক দ্বীপ থেকে আর এক দ্বীপে পর্যটকদের ঘুরিয়ে দেখানো। জাহাজ থেকে নেমে স্পিডবোটে করে অগভীর ব্লু লেগুনে ঘুরে বেড়ান। বোটও চলে আরব সাগরের নীল জলের উপরে লাফিয়ে লাফিয়ে উড়ে উড়ে। সে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। স্ফটিক স্বচ্ছ জল। প্রবাল প্রাচীরে বাধা পেয়ে আছড়ে পড়ে সামুদ্রিক ঢেউ। কুন্ডলী পাকিয়ে চলতে থাকে তটপানে। অনেক দূর থেকে মনে হয় যেন সাদা মুক্তোর মালা পরেছে সুন্দরী নীলাম্বরী দ্বীপকন্যা। আপনার ভ্রমণকে আরও মনোমুগ্ধকর করে তুলবে এনাদের ফাইবার গ্লাসে ঘেরা স্পিডবোটে চড়ে অগভীর সমুদ্রে কোরাল বা প্রবাল দর্শন। ৫ থেকে ১০ ফুট অগভীর স্বচ্ছ নীল জলে প্রবালের ফাঁকে ফাঁকে রঙবেরঙের হাজারো সামুদ্রিক মাছের ইতিউতি ঘুরে বেড়ানো ও খেলা করার লোভনীয় দৃশ্য খুব কাছ থেকে দেখতে পাওয়া সে এক অভাবনীয় উপরি পাওনা।

কোচি থেকে ৪০৫ কি. মি. দূরে কাভারাত্তি দ্বীপে ( Kavaratti Island ) রয়েছে লাক্ষার সদরদপ্তর। পুরো দ্বীপাঞ্চলের প্রাণকেন্দ্রও হলো এই কাভারাত্তি লেগুন বা উপহ্রদ। এই অগভীর শান্ত সমুদ্রের কোথাও ফিরোজা, কোথাও সবুজ আবার কোথাও বা নীল জল। গভীরতার তারতম্য অনুযায়ী জলের এই রদবদলের কারণে এই বিস্তীর্ণ এলাকাকে আরো আকর্ষণীয় লাগে খানিকটা দূরের আকাশ থেকে দেখলে। এই দ্বীপে স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল ( Indira Gandhi Hospital ), সরকারি দপ্তর রয়েছে। স্যাটেলাইট সংযোগে টেলিভিশন চ্যানেলগুলিও উপলব্ধ এখানে। নারকেল গাছে ছাওয়া এই সুন্দর ছোট ভূখণ্ডে অনেক বহিরাগতও বসবাস করছেন। অর্ধ শতকেরও বেশি সংখ্যক মসজিদ আছে এখানে। এর মধ্যে ১৬৭০ খ্রিস্টাব্দে কাঠ দিয়ে তৈরি করা পবিত্র আজারা মসজিদের ( Ajjara Mosque ) সিলিং ও থামগুলির কারুকার্য অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। জনশ্রুতি আছে যে এই মসজিদ লাগোয়া কুয়োর জলের নাকি অলৌকিক গুণ রয়েছে। এই জলে অনেক কঠিন রোগ নিরাময় হয়েছে। জামাত মসজিদটিও ( Jamat Masjid ) খুব সুন্দর। আর রয়েছে মেরিন অ্যাকোয়ারিয়াম ( Marine Aquarium )। এখানে রঙবেরঙের বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ ও প্রবালের বিপুল সংগ্রহ আছে। মিউজিয়ামে ( Museum and Planetarium ) জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের ফসিলের সম্ভার দেখে নিন। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য অপরূপ। ডলফিন ডাইভ সেন্টারে ( Dolphin Dive Centre is Famous For Water Sports ) এসে নানা ধরনের ওয়াটার স্পোর্টসে মেতে উঠুন। সমুদ্র স্নানের জন্য সুবিখ্যাত প্যারাডাইস বিচ রিসর্টটি ( Paradise Beach Resort ) সত্যিই মনোরম। গ্লাস লাগানো বোটে ঘুরে ঘুরে দেখে নিন প্রবাল ও নানাধরনের সামুদ্রিক প্রাণী।

এখানকার জনপ্রিয় খাবার। Popular and Tasty Local Foods :-

এদের প্রিয় খাবার হলো ফিস মাস ( Favourite Food is Fish-Mus )। মাছ সিদ্ধ করে ধোঁয়া লাগিয়ে তারপর রোদে ভালো করে শুকিয়ে তৈরি করা হয় এই খাদ্যটি। এছাড়া, মাছ, কাঁকড়া ও অক্টোপাস দিয়ে বানানো অনেক লোভনীয় স্থানীয় আমিষ খাবার ( Local Non-Veg Food Recipes ) চেখে দেখে নিন। ভালোই লাগবে। এখানকার আর একটি জনপ্রিয় পদ হলো টুনা মাছের ঝোল ( Tuna Fish Curry )। নারকেল দিয়ে বানানো সুস্বাদু নানান স্থানীয় মিষ্টি ও স্ন্যাক্স খেতে পারেন।

কোথায় থাকবেন? Where to Stay?

থাকার জন্য - SPORTS-এর Tourist Complex, PWD-এর DB ও IB, Circuit House, Government Annexe ও বেসরকারি উদ্যোগের Taj Complex Hotel ইত্যাদি রয়েছে এই কাভারাত্তি দ্বীপে।

এই দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে সবচেয়ে দক্ষিণে কাভারাত্তি থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নারকেল গাছে ছাওয়া, পান্না-সবুজ জলের শান্ত উপহ্রদ সম্বলিত অনিন্দ্য সুন্দর দ্বীপটির নাম হলো মিনিকয় ( Minicoy Island )। অন্যান্য দ্বীপের মানুষদের থেকে এরা জীবনযাপন, ভাষা, সংস্কৃতি সবকিছুতেই বেশ আলাদা। দক্ষিণ ভারতীয় সংস্কৃতির প্রভাব থেকে এরা মুক্ত। বরঞ্চ মালদ্বীপের সমাজের সাথে এদের যথেষ্ট মিল রয়েছে। এখানকার কথ্য ভাষা মাল ( Mahl Language )। হিন্দি ভাষারও যথেষ্ট প্রচলন রয়েছে। এই দ্বীপের গ্রামকে বলা হয় আথিরিস ( Athiris )। মোট ৯টি আথিরিস আছে। গ্রামের সর্বময় কর্তা অর্থাৎ মোড়লকে বলা হয় মুপ্পান ( Moopann )। এদের বাড়িঘর ঝলমলে। আসবাবপত্র কাঠের। যথেষ্ট কেতাদুরস্ত ও সংস্কৃতিমনস্ক এখানকার মানুষেরা। ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশের গড়া দুশোরও বেশি ধাপের একটি লাইটহাউস ( Light House ) আছে। এর খুব কাছেই একটি সি বিচ রয়েছে যেখানে স্নান ও বোটিং-এর ব্যবস্থা রয়েছে। স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলও পৌঁছে গেছে মিনিকয়ে। ঐতিহ্যশালী লোকনৃত্য লাভা ( Traditional Folk Dance Lava ) অবশ্যই দেখবেন। অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে শ্রীকৃষ্ণ মন্দির, অসংখ্য মসজিদ, জেটি ঘাটের পাশে অবস্থিত টুনা মাছ টিনজাত করার Light Meat Tuna Canning Factory টি। পর্যটকদের থাকার জন্য আছে SPORTS এর Tourist Home, Tourist Hut ও PWD-র IB-তে। এখানে প্রাইভেট লজও রয়েছে ট্যুরিস্টদের সুবিধার্থে।

কাভারাত্তি থেকে ৮ কি. মি. পশ্চিমে ঘন্টা খানেকের স্পিডবোট যাত্রায় পৌঁছে যাবেন বসতিহীন নারকেল বাগিচায় পরিবৃত মাত্র ১২০ একরের খুব সুন্দর পরিবেশের বাঙ্গারাম দ্বীপে ( Bangaram Island )। একমাত্র এই বাঙ্গারামের দরজা বিদেশীদের কাছে পুরোপুরি উন্মুক্ত। নিশ্চিন্ত হয়ে মদ্যপান করা যায়। পানাহারে কোনরূপ সরকারি নিষেধাজ্ঞা নেই। রুপোলি সাগরবেলাকে ঘিরে রেখেছে শান্ত, স্বচ্ছ গাঢ় সবুজ রঙের একটি উপহ্রদ। অগভীর জলে প্রবালের ফাঁকে ফাঁকে খেলে বেড়াচ্ছে রঙবেরঙের মাছেরা। নির্মল জলের তলায় ছড়িয়ে রয়েছে অজস্র কাঁকড়া, শামুক ও ঝিনুক। সৈকতে উড়ে বেড়াচ্ছে সুন্দর রঙীন প্রজাপতির ঝাঁক। রাতে কচ্ছপেরা সৈকতে এসে ডিম পাড়ে। নানারকম Water Sports-এরও সুবন্দোবস্ত রয়েছে। এখানে দেখা সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত ও পূর্ণিমা রাত কোনদিনই ভুলতে পারবেন না। বেলাভূমি শেষ হতেই প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম নারকেল বাগানের আরম্ভ। বাঙ্গারামের গা ঘেঁষে আরও দুটি ছোট Tirmakara, Parali 1 and 2 নামের বসতিহীন সুন্দর দ্বীপ আছে।

কালপেনি থেকে ৪০ কি. মি. দূরে ও কাভারাত্তি থেকে ২৫ কি. মি. দূরত্ব জলপথে স্পিডবোটে করে মাত্র দুই ঘন্টায় অতিক্রম করে পৌঁছে যেতে পারবেন আর একটি সুন্দরী দ্বীপভূমি আগাতিতে ( Agatti Island )। সোনালী সবুজ নারকেল বাগানের মাঝ দিয়ে পথ গিয়ে মিশেছে সাগরের নীল জলে। বামদিকে রয়েছে স্ফটিক-স্বচ্ছ পান্না-সবুজ শান্ত অগভীর উপহ্রদ। অগভীর জলের তলদেশে প্রবাল সাম্রাজ্য। চশমা লাগানো স্নর্কেলিং-এর মুখোশ পরে নেমে পড়ুন প্রবাল রাজ্যে। সত্যিই যেন স্বপ্নে দেখা স্বর্গরাজ্য এই আগাতি। কোচি থেকে বিমান যাচ্ছে এই দ্বীপে। বিমানের জানালা দিয়ে অপরূপ সুন্দর লাগে দেখতে। ওয়াটার স্পোর্টসের ব্যবস্থা আছে। থাকার জন্য Agatti Island Beach Resort ও বেসরকারি মালিকানাধীন রিসর্ট হয়েছে।

লাক্ষা দ্বীপপুঞ্জের সুন্দরতম দ্বীপ হলো কালপেনি ( Kalpeni Island )। কোচি থেকে ২৮৭ কি. মি. দূরে কাভারাত্তির দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত নারকেল গাছে ছাওয়া পান্না দ্বীপ বলা হয় একে। একে আরও অপরূপা করে তুলেছে এর লেগুন বা উপহ্রদটি। এখান থেকে স্পিডবোটে করে বসতিহীন Tilakkam দ্বীপে গিয়ে সমুদ্রস্নান সেরে নিতে পারেন। মৎস্য দপ্তরের অ্যাকোয়ারিয়ামে ( Aquarium of Fishery Department ) গিয়ে সামুদ্রিক প্রাণীর সংগ্রহ দেখে নিন। ১৮৫ ধাপের যে লাইটহাউসটি ( Light House ) আছে সেটির মাথায় উঠে পাখির চোখে পুরো কালপেনিকে দেখে নিন। এটি একটি অনন্য অভিজ্ঞতা হবে। ভ্রমণের স্মৃতিচিহ্ন স্বরূপ কিছু হস্তশিল্পজাত ( Handicrafts ) সামগ্রী কিনে নিতে পারেন হোসিয়ারী মিল বা খাদিভবন থেকে। বৃষ্টি এখানকার মিষ্টি জলের একমাত্র উৎস। এখানকার মেয়েরা লুঙ্গির মতো করে সারোঙ পরে। মহিলারা সোনার গয়না পরতে যথেষ্ট ভালোবাসেন। এনারা বহিরাগত পর্যটকদের অভ্যর্থনা জানান Kolkali ও Parichakkali Dance-Song-Orchestra সহযোগে। থাকার জন্য Tourist Cottage আছে।

কালপেনি ও সুহেলি দ্বীপের ( Suheli Island ) মাঝে আর এক বসতিহীন দ্বীপ হলো পিট্টি ( Pitty Island )। পাখিদের স্বর্গরাজ্য পিট্টি দ্বীপে ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারিও গড়ে উঠেছে। পাখিদের আর এক স্বর্গ চেতলাত ও বিট্রা দ্বীপ ( Chetlat and Bitra Island ) নিয়ে গড়ে উঠেছে আমিনদিভি ( Amindivi )। আরব থেকে আসা ফকির মালিক মুল্লা দেহত্যাগ করেন বিট্রায়। সমাধিস্থ রয়েছেন এখানে। সমাধিস্থলের উপরে একটি মাজার নির্মাণ করা হয়েছে। এই স্থানটিকে খুবই পবিত্র বলে মনে করেন সকলে।
এই Union Territory-এর আর এক সুন্দরী ভূখণ্ড হলো কদমাত দ্বীপ ( Kadmat Island )। উদ্দাম সাগরের ঢেউগুলো সশব্দে আছড়ে পড়ছে শান্ত কোলাহল বিহীন চারিপাশের সমুদ্রতটের বুকে। দূষণমুক্ত সুনীল আকাশের নীচে সবুজ নারকেল বাগিচা যেন চাঁদোয়া টাঙিয়ে রেখেছে কদমাতের অতিথিদের জন্য। সমস্ত দ্বীপ ঘিরে রয়েছে রুপোলি সাগরবেলা। সত্যিই অপরূপা। পূর্ব ও পশ্চিম জুড়ে ছড়িয়ে আছে উপহ্রদ অর্থাৎ লেগুন। এখানে নানা ধরনের ওয়াটার স্পোর্টসের সুবন্দোবস্ত আছে। থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারেন Tourist Cottage ও Youth Hostel-এ।

লাক্ষার আর এক সুন্দরী দ্বীপভূমি হলো আনদ্রোত ( Andrott Island )। আগে এটিতে ভারতীয়সহ সমস্ত পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। তবে এখন সেই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছে। ভারতের মূল ভূখণ্ডের নিকটতম এবং এখানকার সবকয়টি দ্বীপের মধ্যে বৃহত্তম এটি। কোচি থেকে দূরত্ব মাত্র ২৯৩ কি. মি.। ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে এসে জেড্ডার সুফি সাধক উবেদুল্লাহ এখানেই দেহত্যাগ করেন। আনদ্রোতের জুমা মসজিদে সমাধিস্থ রয়েছেন এই মহাত্মা। সারা ভারত তথা বিশ্বে এই মাজারটি পবিত্র মুসলিম তীর্থ হিসেবে পরিগণিত হয়।

কিভাবে যাবেন? How to Reach or Go?

রেল, বিমান বা সড়কপথে ভারতের যেকোন প্রান্ত থেকে প্রথমে কেরালায় পৌঁছতে হবে। তারপর SPORTS-এর জাহাজে করে Coral Reef প্যাকেজে মনের সুখে দ্বীপ থেকে দ্বীপান্তরে ঘুরে বেড়াতে পারেন। অন্য প্যাকেজে বা একক ভাবে Permit নিয়ে গেলে কোচি থেকে জাহাজে করে কাভারাত্তি পৌঁছে তারপর স্পিডবোট বা হেলিকপ্টারে করে এক দ্বীপ থেকে আর এক দ্বীপে ঘুরতে পারেন। এককভাবে গেলে অনেক হ্যাপা রয়েছে। তারচেয়ে ভালো প্যাকেজ ট্যুরে যাওয়া।

কেনাকাটা। What are The Things You Should Buy ( Marketing ) While Traveling?

নারকেল দিয়ে তৈরি করা বিভিন্ন শুকনো খাবার, টিনবন্দী টুনা মাছ, খাদি ভবন থেকে কেনা বিভিন্ন ধরনের হস্তশিল্পজাত সামগ্রী, সৈকত থেকে কুড়িয়ে পাওয়া রঙবেরঙের ঝিনুক-ছোট শঙ্খ লাক্ষাদ্বীপ ভ্রমণের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে বাড়ির জন্য নিয়ে যেতে পারেন। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Please, Don't Spam.

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷