PAST HISTORY & SOME VALUABLE INFORMATIONS ABOUT RAJASTHAN:-
রাজস্থান রাজ্যে ভ্রমণ করার প্রসঙ্গ উঠলেই চোখের সামনে রাজপুত রাজাদের পুরাতন কেল্লা ( Fort ), মরুভূমি, উট এবং আরাবল্লী পর্বতের ছবি চোখের সামনে ভেসে ওঠে। ভালোবাসা, ভক্তি, বিশ্বাস, রক্তপাত, শৌর্য এবং বীর্যে ভরা অসংখ্য কাহিনী এর আকাশে বাতাসে এখনও অদৃশ্য আলোড়ন তুলে চলেছে। মীরাবাঈ-এর প্রেম-ভক্তি ভরা ভজন আর রাজপুত রাজাদের বীরত্বের কাহিনী আজ ইতিহাস হলেও সারা বিশ্বের মানুষের মনে এসবের প্রভাব চিরদিন তরতাজা ছিল, আছে এবং থাকবে। অসামান্য সমস্ত দৃশ্যপট, এখানকার রাজস্থানী সংস্কৃতি এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন সমূহকে চাক্ষুষ করার জন্য সারা বছর ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তই শুধু নয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভ্রমণপিপাসু এবং ইতিহাসপ্রিয় মানুষজন এখানে ছুটে আসে।
এই রাজ্যের রাজধানী হলো জয়পুর ( Capital City is Jaipur )। মোট এলাকা ( Total Area ) বা আয়তন ৩৪২২৩৯ বর্গ কি. মি. ( ১৩২১৩৯ বর্গ মাইল )। মোট জনসংখ্যা ( Total Population ) ৬৮৬২১০১০। প্রতি বর্গ কিলোমিটারে জনঘনত্ব ( Population Density ) ২০০। এখানকার অধিবাসীদের বলা হয় রাজস্থানী ( Rajasthani )। প্রতি ১০০০ পুরুষ পিছু নারীর সংখ্যা ৯২৬ ( Sex Ratio of Male and Female )। সাক্ষরতার হার ( Percentage of Literacy ) ৬৭.০৬%। প্রধান ভাষা ( Main Languages ) হলো হিন্দি, ইংরেজি এবং রাজস্থানী। এছাড়া, অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষা ( Other Local Languages ) হ'ল মারোয়াড়ী, জয়পুরী, মালভি, মেওয়াটি ইত্যাদি। মাথাপিছু বার্ষিক আয় ( Per Head / Per Capita Yearly Income ) ১০৯১০০ টাকা। জনপ্রিয় লোকনৃত্য ( Folk Dance ) ঘুমর ( Ghoomar )। প্রধান পশু উট এবং চিঙ্কারা ( Main Animals are Camel & Chinkaara )।
WHEN SHOULD YOU GO THERE? / BEST TIME TO VISIT OR TRAVEL THIS STATE. AVERAGE WEATHER OR CLIMATE:-
শীত ও গ্রীষ্ম দুইয়েরই যথেষ্ট দাপট আছে এই রাজ্যে। বছরের যে কোন সময় আসা গেলেও এখানে বেড়াবার আদর্শ সময় অক্টোবর মাসের শুরু থেকে মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। মে-জুন মাসের তাপমাত্রা ৪৫° সেলসিয়াসের উপরে থাকে। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত থাকে বর্ষাকাল। এই সময় ভ্রমণের অভিজ্ঞতাও কম রোমাঞ্চকর নয়। এই সময় রুক্ষভাব কিছুটা মলিন হয়ে অনেকটাই সবুজে ভরে ওঠে। লেকগুলিও জলে টইটম্বুর হয়ে থাকে। আবার অক্টোবর মাস থেকে আকাশ মেঘমুক্ত হয়। সূর্যের ঝলমলে আলোয় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে দিন। রাতের আকাশের তারাদের ঝিকিমিকি আর চাঁদের মায়াবী স্নিগ্ধ আলোয় স্নাত হয়ে সমস্ত চরাচর এক অলৌকিক রূপ ধারণ করে ওঠে। অক্টোবর থেকে সকালে এবং সন্ধ্যাবেলায় গরম উলের পোশাক বা হালকা জ্যাকেটের প্রয়োজন হয়। রাতে কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমোতে হয়।
Government Official Website - http://www.rajasthan.gov.in
Tourism Department Official Website - http://www.tourism.rajasthan.gov.in
মোট জেলা ৩৩ ( Total Number of Districts is 33 ) টি। যথা,(1) আজমের ( Ajmer ), (2) আলোয়ার ( Alwar ), (3) বাসওয়ারা ( Banswara ), (4) বারন ( Baran ), (5) বারমের ( Barmer ), (6) ভরতপুর ( Bharatpur ), (7) ভিলওয়ারা ( Bhilwara ), (8) বিকানের ( Bikaner ), (9) বুন্দি ( Bundi ), (10) চিতোরগড় ( Chittorgarh ), (11) চুরু ( Churu ), (12) দৌসা ( Dausa ), (13) ঢোলপুর ( Dholpur ), (14) দুঙ্গারপুর ( Dungarpur ), (15) হনুমানগড় ( Hanumangarh ), (16) জয়পুর ( Jaipur ), (17) জয়সালমের ( Jaisalmer ), (18) জালোর ( Jalor ), (19) ঝালাওয়ার ( Jhalawar ), (20) ঝুনঝুনু ( Jhunjhunu ), (21) যোধপুর ( Jodhpur ), (22) কারাউলি ( Karauli ), (23) কোটা ( Kota ), (24) নাগাউর ( Nagaur ), (25) পালি ( Pali ), (26) প্রতাপগড় ( Pratapgarh ), (27) রাজসামান্দ ( Rajsamand ), (28) সাওয়াই মাধোপুর ( Sawai Madhopur ), (29) সিকার ( Sikar ), (30) সিরোহি ( Sirohi ), (31) শ্রী গঙ্গানগর ( Sri Ganganagar ), (32) টঙ্ক ( Tonk ), (33) উদয়পুর ( Udaipur )।
ALL TOTAL LIST OF 31 VERY BIG, MOST POPULAR OR FAMOUS LOCAL FAIRS & MAJOR FESTIVALS:-
(i) Mewar Festival Udaipur, (ii) Teej Festival Jaipur, (iii) Gangaur Fest & Fair Jaipur, (iv) Elephant Festival Jaipur, (v) Camel Utsav Bikaner, (vi) Dussehra in Kota, (vii) Desert Festival Jaisalmer, (viii) Summer Fest Mount Abu, (ix) Winter Festival Mt. Abu, (x) Rajasthan International Folk Utsav, (xi) Braj Holi Bharatpur, (xii) Shree The Sacred Fest Puskar, (xiii) Adventure Fest Kota, (xiv) Jaipur Literature Mahotsav, (xv) Marwar Utsav Jodhpur, (xvi) Bundi Fest in Bundi, (xvii) Kumbhalgarh Festival, (xviii) Kite Festival Jaipur, (xix) Pushkar Mela Pushkar, (xx) Kolayat Fair Bikaner, (xxi) Nagaur Mela, (xxii) Urs Fair Ajmer, (xxiii) Ramdevra Fair Jaisalmer, (xxiv) Baneshwar Mela Dungarpur, (xxv) Shri Mahavirji Fair Jaipur, (xxvi) The Kaila Devi Mela, (xxvii) Gogaji Mela Hanumangarh, (xxviii) Karni Mata Fair Bikaner, (xxix) Chandrabhaga Fair Jhalrapatan, (xxx) Matsya Festival Alwar, (xxxi) Kabir Yatra Folk Music Carnival Bikaner.
[ TOP PLACES TO VISIT OR MAJOR TOURIST ATTRACTIONS IN RAJASTHAN, INDIA WITH PROPER TOUR PLAN ON MAIN TRAVEL DESTINATIONS AND OTHER NEAREST BEAUTIFUL SPOTS. ]
বিকানীর ( Bikaner ) - রাজস্থানের রাজধানী জয়পুর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দূরে ২৪০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত আর এক মধ্যযুগের ভারতীয় শিল্প-সংস্কৃতির পীঠস্থান সুন্দর মরুশহর হলো এই বিকানের। কয়েক লাখ লোকের বসবাস এখানে। এছাড়া প্রতি দিন দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটকদের আনাগোনা তো লেগেই রয়েছে। এটি থর মরুভূমিরই অংশ একটি মরুশহর ( Small Part of Thar Desert )। এই শহরের নামকরণ হয়েছে ভাটি রাজপুত যোধপুররাজ রাও যোধার দ্বিতীয় পুত্র সেরা বিকার নাম থেকে। তিনশো বছরের বেশি সময় ধরে যোধা রাজবংশ রাজত্বও করেন এখানে। তবে, আধুনিক বিকানীরের প্রতিষ্ঠাতা বলতে মহারাজা গঙ্গা সিংকে বোঝায়। তিনিই প্রথম শহরে রেলগাড়ি আনার পাশাপাশি গঙ্গা ক্যানাল কাটিয়ে জল এনে সবুজায়নের অর্থাৎ রুক্ষ-শুষ্ক মরুভূূূূূমিকে শস্য-শ্যামলা করে তোলার স্বপ্ন দেখান। তাঁর দেখা স্বপ্ন কিছুটা হলেও আজ সফল হয়েছে। গঙ্গা খাল দিয়ে আনানো জল পেয়ে কৃষিতে অগ্রগতির সাথে সাথে সবুজায়ন বাড়ছে। ভেড়ার লোমজাত উলের শিল্পেও ( Bikaner is Very Famous For Woolen Industry ) যথেষ্ট সমৃদ্ধ এই বিকানের। রেল স্টেশন থেকে ১ কি. মি. দূরে মূল বাসস্ট্যান্ডটি অবস্থিত। এর পাশেই রয়েছে এই শহরের প্রধান আকর্ষণ জুনাগড় দূর্গ ( Junagadh Fort )। বিপরীতে আছে বিকানীর আদালত ( Bikaner Court ) চত্বর। দূর্গের সামনে আছে জুনাগড় ফোর্ট শাহি পার্ক ( Junagadh Fort Shahi Park )। এই পাবলিক পার্কের জ্যুলজিক্যাল গার্ডেন, রতনবিহারী মন্দির ও রসিক শিরোমণি মন্দির হলো এই এলাকার কয়েকটি রমণীয় দ্রষ্টব্য স্থান। উদ্যান এলাকার শেষেই রয়েছে গান্ধী ময়দান। আর একটু এগিয়ে গেলেই দেখতে পাবেন গঙ্গা গোল্ডেন জুবিলী মিউজিয়াম, জৈন মন্দির তুলসী। এই শহরে ভ্রমণের সময় কোন কিছু জানতে বা সাহায্যের জন্য চলে যান পূরণ সিং সার্কেলের RTDC-র Dhola Maru Tourist Lodge-এর সরকারি Tourist Office-এ। লোকমুখে শোনা যায় বহু আগে সরস্বতী নদী বয়ে যেত এই অঞ্চলের উপর দিয়ে। এই শহরের সভ্যতা, সংস্কৃতি ও সমৃদ্ধির বিকাশ শুরু হয় তখন থেকেই। যদিও বর্তমানে এই প্রাচীন নদীটির আর কোন অস্তিত্বই নেই। শহরটি বহু আগে বিশালাকার ৫ দরজা বিশিষ্ট ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ উঁচু প্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিল। পর্যটকদের জন্য এই নগরীর নতুন সংযোজিত আকর্ষণ হলো জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত ঢোলা মারু অর্থাৎ উট উৎসব ( Dhola Maru or Camel Festival )। এই উৎসব উপলক্ষে দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর উট আসে। তারা সুসজ্জিত হয়ে নানা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। ইভেন্টে অংশগ্রহণ করা উটেদের দুলকি চাল ও নৃত্য দর্শকদের আনন্দ দেয়। আর একটি জনপ্রিয় উৎসব হলো গাঙ্গুর ( Gangaur Fair & Festival )। এটি মূলতঃ মেয়েদের সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান। নারীকেন্দ্রিক এই উৎসব হোলির পরদিন শুরু হয়ে ১৮ দিনব্যাপী চলতে থাকে। মেয়েরা শিবপত্নী পার্বতী দেবীর সাথে সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করে ব্রত পালন করেন।
জুনাগড় দূর্গটি ( Junagadh Fort ) হলো শহরের পর্যটন শিল্পের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। ১৫৮৭ থেকে ১৫৯৩ সালের মধ্যে আকবরের সেনাপতি রাজা রাই সিং লাল ও গোলাপি বেলে পাথর দিয়ে এই দূর্গটি নির্মাণ করেন। পরবর্তী শাসকদের সময়ে ধাপে ধাপে ৩৭ টি প্রাসাদের সংযোজন ঘটেছে। উঁচু চওড়া পাঁচিল ও চারপাশে ৩০ ফুট গভীর পরিখা দিয়ে সুুুুুরক্ষিত এই চারকোনা দূর্গটি। প্রায় ১০০০ মিটার চওড়া এই দূর্গে ৩৭ টি বুরুজ ও দুুুটো প্রবেশপথ রয়েছে। পশ্চিমের প্রবেশপথে আবার দুটি গেট। মূল প্রবেশ দ্বারটির নাম সূরজ পোল বা সান গেট। এটি হলুুদ বেলেপাথর দিয়ে তৈরি। ভিতরের দেওয়াল চিত্র, পটচিত্র ও পাথরের কাজ সত্যিই দেখার মতো। লাল নিবাসের স্বর্ণখচিত অলঙ্করণ, চন্দ্র মহলের কাঁচ ও মার্বেলের কারুকার্য, ফুল মহলের রঙীন কাঁচের অভিনবত্ব ও ফুলের বর্ণালী তাক লাগিয়ে দেয়। অনুপ মহলের রাজতিলক অর্থাৎ করোনেশন হলের কাঁচখচিত কাঠের ছাদ, ইতালিয়ান মোজাইক, জাফরি শিল্প অপূর্ব। দেওয়ানি খাসে গিয়ে অস্ত্র ভান্ডার ও বাদল মহলের ছবিতে কৃষ্ণগাঁথা দেখে নিন। মোগলি স্থাপত্যে গড়া সূর্য নিবাস বা দরবার হলে ছবির সংগ্রহ দেখার মতো। এছাড়া, গঙ্গা নিবাস, দূর্গা নিবাস, করণ মহল, শিশ মহল, ছত্তর মহল, বিজলী মহল আপনারই অপেক্ষায় আছে। রাজ পরিবারের গৃহদেবতা শিবঠাকুুুরের হরমন্দিরে অতীতে রাজপরিবারের জন্মদিন ও বিবাহ অনুষ্ঠান হতো। হাজারি দরওয়াজা মিউজিয়়ামে রাজপরিবারের বিভিন্ন স্মারক ও মিনিয়েচার পেইন্টিং দেখুন। সবুজ ও সাদায় মোড়া চীনা টাওয়ার অর্থাৎ চিনি বুুুরুজও আর এক দ্রষ্টব্য। দ্বিতীয় দরজার কাছে দৌলত পোলে সতীদের হাতের ছাপ আর এক বিশেষ আকর্ষণ। গাইডের চার্জসহ টিকিট কেটে এই দূূর্গে ( Junagadh Fort ) ঢুকতে হয়। ক্যামেরা ব্যবহার করলে আলাদা চার্জ লাগে। দীপাবলি ও হোলি উৎসব ছাড়া সকাল ১০ টা থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত খোলা থাকে। প্রবেশপথের রয়্যাল টেক্সটাইল ও পোশাকের সংগ্রহশালা বা মিউজিয়ামটি অবশ্যই ঘুরে নেবেন। সামান্য মূল্যের টিকিটের বিনিময়ে এখানে ঢুকতে হয়। প্রাসাদের ভিতরে হোটেলও আছে।
গঙ্গা গোল্ডেন জুবিলী মিউজিয়াম ( Ganga Golden Jubilee Museum ) - এই বিখ্যাত সংগ্রহশালাটি জুনাগড় দূর্গের বিপরীতে গান্ধী উদ্যান পার হয়ে রাজস্থান ট্যুরিজমের ট্যুরিস্ট বাংলোর কাছে NH-4 - এ অবস্থিত। আপনি এখানে অনেক ব্যতিক্রমী ঐতিহাসিক মূল্যবান সম্পদ দেখতে পারবেন। যেমন, গুপ্তযুগের টেরাকোটা সামগ্রী, কুষাণ ও প্রাক হরপ্পাকালের বিভিন্ন নিদর্শন। মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজা রাই সিংকে দেওয়া উপহার বা নজরানা যেমন, সিল্কের পোশাক ও সাদা মার্বেল পাথরের সরস্বতী দেবী মূর্তির ভাস্কর্য এই মিউজিয়ামের সম্মানকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন সময়ের রাজাদের ব্যবহৃত আবরণ ও আভরণ, মুদ্রার সংগ্রহ, প্রাচীন মৃৎশিল্পের সামগ্রী, অতীতের চিঠিপত্র, নানারকম অস্ত্র, মূর্তি ও প্রচুর সংখ্যক ছবি। হোলি ও দীপাবলি ছাড়া প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত খোলা থাকে। যৎসামান্য মূল্যের টিকিট কেটে Ganga Golden Jubilee Museum-এ ঢুকতে হয়।
লালগড় প্রাসাদ ( Lalgarh Palace - The Red Fort, NH15, Samta Nagar, Bikaner, Rajasthan - 334001 ) - মহারাজা গঙ্গা সিং তাঁর পিতা লাল সিং-এর স্মৃতিরক্ষার্থে ব্রিটিশ স্থপতি স্যুইনটন জ্যাকবের নকশা অনুসারে গেরুয়া রঙের বেলেপাথর দিয়ে ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে এই লালগড় প্রাসাদ বা বিকানেরের রেড ফোর্ট তৈরি করান। এটি শহরের শেষপ্রান্তে Lalgarh Junction Railway Station থেকে মাত্র ১.৫ কি. মি. দূরে অবস্থিত। এই ঐতিহাসিক প্রাসাদ দূর্গে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বৈভব ও স্থাপত্যশৈলীর এক সুন্দর মেলবন্ধন ঘটেছে। এখানকার দর্শনীয় বিষয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো - বেলজিয়াম ঝাড়লন্ঠন, কাট গ্লাসের কারুকার্য, অতি মনোরম জালিকাজ, কার্ভিং, সুন্দর নকশা, পুরাতন ছবির সংগ্রহ, শিকার করা সংরক্ষিত জীবজন্তু, যত্নে সাজানো ফুলের বাগান, বিকানীর স্টেট রেলের বগি, ছোট চিড়িয়াখানা ইত্যাদি। প্রাসাদের মূল অংশে এখনও রাজপরিবারের সদস্যরা বসবাস করছেন। আর এক অংশে লক্ষ্ণীনিবাস প্যালেস হেরিটেজ হোটেল হয়েছে। প্রাসাদের দ্বিতীয় তলায় মহারাজা অনুপ সিং-এর ব্যক্তিগত সংগ্রহশালা পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে। এখানকার অনুপ সংস্কৃত লাইব্রেরিতে দুষ্প্রাপ্য, দুর্মূল্য পান্ডুলিপি এবং গ্রন্থের বিশাল Collections দেখতে পাবেন। আর আছে পারিবারিক ব্যবহৃত সামগ্রীর স্মারক সম্ভারে সমৃদ্ধ শার্দুল সিং মিউজিয়াম। রবিবার সারাদিন বন্ধ। এছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য খোলা থাকে। সামান্য মূল্যের টিকিট কেটে ঢুকতে হবে। ক্যামেরার জন্য আলাদা চার্জ লাগবে।
জৈন মন্দির কমপ্লেক্স ( Jain Temples Complex, Old Bikaner ) - শহর থেকে অল্প কিছু দূরে পুরাতন বিকানীরে জৈনদের পবিত্র তীর্থক্ষেত্র এবং পর্যটকদের অবশ্য দ্রষ্টব্য জৈন মন্দির কমপ্লেক্স চত্বর অবশ্যই দেখে নেবেন। চৌদ্দ শতকের বিভিন্ন সময়ে নির্মিত অনেকগুলি জৈন মন্দির পাশাপাশি অবস্থান করছে। এদের মধ্যে দুটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। একটি হলো ভান্ডেশ্বর ( Seth Bhandasar Jain Temple ) আর অপরটি ষন্ডেশ্বর ( Seth Shandeswar Jain Temple )। দুজন ধনী ব্যবসায়ী ভাতৃদ্বয়ের নামেই এই বিখ্যাত মন্দির দুটি। ভান্ডেশ্বর কাঁচ ও ফ্রেস্কো ছবিতে সুন্দর ভাবে সজ্জিত। ষন্ডেশ্বরের খ্যাতি দেওয়াল চিত্রের কারণে। এই চিত্রগুলি এনামেল ও সোনায় মোড়া। মন্দিরের মাথায় স্বর্ণমন্ডিত পতাকা পতপত করে উড়ছে। ভান্ডেশ্বরের দেবতা হলেন পঞ্চম তীর্থঙ্কর সুমিনাথ আর ষন্ডেশ্বরের দেবতা হলেন তীর্থঙ্কর নেমিনাথ। এছাড়া, চিন্তামণি, নেমিনাথ, আদিনাথ জৈন মন্দিরগুলিও সুন্দর। সকাল ৬ টা থেকে ১১ টা আর সন্ধ্যা ৭ টা থেকে ৮ টা পর্যন্ত এই মন্দির সকল খোলা থাকে। পাশেই রয়েছে লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দির।
দেবী কুন্ড সাগর ( Devi Kund Sagar ) - মূল শহর থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে এই বিখ্যাত রাজ সমাধিস্থলটি অবস্থিত। যতজন রাজপরিবার বিকানের শাসন করেছেন তাঁদের সকলের মিলিয়ে শতাধিক সুন্দর সমাধি রয়েছে এই দেবী কুন্ড স্থানে। এই সমাধিগুলিকে ছত্তিশ বলে। এগুলো বেলেপাথর ও শ্বেতপাথর দিয়ে তৈরি। সবকয়টি স্মৃতি স্তম্ভের মধ্যে রাও কল্যাণমাঈয়ের স্তম্ভটি সবচেয়ে প্রাচীন। মহারাজা করণ সিং, অনুপ সিং, সুরথ সিংদের শ্বেতপাথরে গড়া সুন্দর চিত্রে সুশোভিত ছত্তিশগুলি সত্যিই অতুলনীয়। Devi Kund Sagar-এ শেষ ছত্তিশটি গড়া হয়েছিল ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে।
ক্যামেল ব্রিডিং ফার্ম ( Camel Breeding Farm, National Research Centre on Camel, Jodhpur Bypass, Bikaner, Rajasthan - 334022 ) - শহর থেকে দক্ষিণে কিছুটা দূরে এশিয়ার বৃহত্তম সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার অফ ক্যামেলস আর এক দর্শনীয় স্থান। এটি ১৯৭৫ সালে ২০০০ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত কয়েকশো উটের প্রজনন কেন্দ্র। অটো বা ট্যাক্সি ভাড়া করে ঘুরে আসুন। চাইলে উটের পিঠে চড়তে পারেন এবং উটের মিষ্টি দুধের স্বাদও নিতে পারেন। প্রতিদিন বিকেল ৩ টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। যৎসামান্য মূল্যের টিকিট কেটে এখানে ঢুকতে হয়। ১৯ শতকে তৈরি ডুঙ্গার সিংজির তৈরি করা শিববাড়ি মন্দিরটিও দর্শন করে আসতে পারেন।
দেশনোক করণীমাতা মন্দির ( Karni Mata Temple, Deshnok ) - রাজপরিবারের আরাধ্যা দূর্গার অবতার দেবী করণীজী এখানে শিলারূপে পূজিতা। শ্বেতপাথর দিয়ে তৈরি দ্বিতল এই মন্দিরটি নির্মিত হয় সতেরো শতকে। এর চূড়ায় রয়েছে একটি সোনার ছাতা। মন্দিরটির মার্বেল কার্ভিংস এবং ভাস্কর্য মন্ডিত রূপোর তোরণ বা দরজাটিও খুব সুন্দর। এর অন্যতম বিশেষত্ব ও আকর্ষণ হলো পুরো চত্বর জুড়ে অসংখ্য কাবাস অর্থাৎ সাদা ইঁদুর ঘুরে বেড়ায়। প্রচলিত ধারণা আছে যে যার শরীরে উঠবে তাঁর পুণ্য অর্জন হবে। আর পদপৃষ্ট হয়ে ইঁদুর মারা পড়লে নাকি পাপের সাথে শাস্তিও ধার্য্য হয়। সাদা ইঁদুর দর্শন করলেও নাকি পুণ্যার্জন হয়। স্থানীয় মানুষদের বিশ্বাস যে পুণ্যাত্মারাই পুনর্জন্ম নিয়ে এখানকার কাবাস হয়েছেন। শহরের নতুন বাস স্ট্যান্ড থেকে মন্দির অবধি ঘন ঘন বাস, ট্যাক্সি এবং অটো যাতায়াত করছে। ট্রেনে করেও Deshnok সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায়। বেলা ১২ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত Karni Mata Mandir -এর দরজা বন্ধ থাকে। এখানে কোন থাকার হোটেল পাবেন না।
গজনের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র ও শিকার মহল প্রাসাদ ( Gajner Wildlife Sanctuary and Safari Park With Palace ) - বিকানের শহর থেকে ৩০ কি. মি. জয়সলমীরের পথে গিয়ে পৌঁছে যাবেন মহারাজা গঙ্গা সিং-র গড়ে তোলা শিকার মহল প্রাসাদ। চারিদিকে জঙ্গল দিয়ে ঘেরা কৃত্রিম লেকের পাড়ে গা ছমছমে নিরিবিলি সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশে এই Gajner Palace-টি অবস্থিত। প্রাসাদের আসবাবপত্র, ছবি ও কার্পেটের সংগ্রহ দেখলে আপনি অবশ্যই মুগ্ধ হবেন। এই শিকার মহলে একটি হেরিটেজ হোটেল স্থাপিত হয়েছে ( Gajner Palace Hotel, Tel- 01534 275061 )। আর একটি মিউজিয়ামও রয়েছে। গোলাপ বাগানটিও খুব সুন্দর। রাজা-মহারাজাদের সময় বুনো কুকুর ও হাঁস শিকারের জন্য গজনের বিখ্যাত ছিল। বর্তমানে লেকটিকে ঘিরে ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারি গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে এসে আপনি নীলগাই, চিঙ্কারা, ব্ল্যাক বাক, গজলা হরিণ দেখতে পাবেন। শীতকালে এই লেকে পরিযায়ী পাখিদের ভেসে বেড়াতে দেখা যায়। চাইলে লেকের জলে বোটিং-ও করা যায়। এখান থেকে দেখা সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের শোভা অতুলনীয়। শহর থেকে আধঘণ্টা অন্তর বাস রয়েছে। প্রবেশ করা ও ১ ঘন্টা জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানোর জিপ সাফারির জন্য আলাদা করে মূল্য ধার্য করা আছে।
গজনের থেকে ১৫ কি. মি. দূরত্বে জয়সলমীরের দিকের বাস রাস্তায় হিন্দুদের পবিত্র তীর্থক্ষেত্র কোলায়েত ( Kolayat ) রয়েছে। এখানকার স্থানীয়রা দাবি করেন যে বৈদিক যুগে সাগর দ্বীপে আশ্রম প্রতিষ্ঠার আগে কপিল মুনি এই কোলায়েতেই তাঁর আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে এখানে একটি প্রাচীন মন্দির আছে। প্রতি বছর কার্তিক পূর্ণিমায় এখানে একটি বড়ো মেলা বসে। এটি Kolayat Fair হিসেবে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে পরিচিত। বাসে বা ট্রেনে করে কাছের যেকোন শহর থেকে এখানে সহজেই পৌঁছতে পারবেন।
মোটামুটি দরদাম করে অটো বা ছোট গাড়ি দিনভর প্রোগ্রাম হিসেবে ভাড়া করে মাত্র দুই দিনের মধ্যে পুরো Bikaner শহর ও আশপাশের সমস্ত দর্শনীয় স্থানসমূহ খুব ভালোভাবে ঘুরে ঘুরে দেখে নিতে পারবেন।
এই শহরের সুস্বাদু, জনপ্রিয় ও বিখ্যাত খাবার। ( Famous, Popular and Tasty Foods in This City ) - স্টেশন রোডের অম্বর রেস্টুরেন্টের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। এই রেস্তোরাঁর স্পেশাল দোসার সুখ্যাতি আছে। ছোটুমুটু যোশী রেস্টুরেন্ট বিখ্যাত ও সুনাম অর্জন করেছে বিভিন্ন সুস্বাদু নিরামিষ খাবার, মিষ্টি ও লস্যির জন্য। এটিও স্টেশন রোডে অবস্থিত। এছাড়া আরো প্রচুর নামী, সুখ্যাত খাবারের হোটেল-রেস্তোরাঁ রয়েছে সমস্ত শহর জুড়ে। এগুলো থেকে বাজরার রুটি, ডালমাখানি, মিঠাই ও ভুজিয়ার স্বাদ অবশ্যই নেবেন। সারা বিশ্বে ভুজিয়ার পীঠস্থান হিসেবে সুপরিচিত বিকানীরের ভুজিয়াগলির ভুজিয়ার স্বাদের কোন তুলনাই হয় না। হলদিরাম ও বিকানীর ভুজিয়া ভান্ডারের নাম আজ লোকের মুখে মুখে ফেরে।
কি কি কিনবেন? What are The Things You Should Buy ( Marketing ) While Traveling This City? - আমার মতে, জুনাগড় দূর্গের কাছের মহাত্মা গান্ধী রোড অথবা স্টেশন রোডের দোকান গুলিই হলো কেনাকাটা করার সবচেয়ে সেরা জায়গা। এসব জায়গা থেকে আপনার ভ্রমণের স্মৃতিচিহ্ন স্বরূপ বা নিজের ব্যবহার করার জন্য হাতে ছাপা কটন টেক্সটাইল, ফ্রেস্কো চিত্র, বিভিন্ন রকম হস্তজাত পণ্য, উসতা শিল্প অর্থাৎ উটের চামড়ার জুতো, পার্স, কুশন ইত্যাদি কিনতে পারেন।
কিভাবে যাবেন? How to Reach / Go?
রেলপথে কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই, আহমেদাবাদ, জয়পুর সহ ভারতের যেকোন বড়ো শহরের সাথে বিকানীরের ভালো যোগাযোগ রয়েছে। বিমানে যেতে হলে জয়পুর বা বিকানীর বিমানবন্দরে পৌঁছে তারপর গাড়ি বা বাসে করে শহরে পৌঁছতে হবে। রাজস্থানের বা পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির যেকোন শহর থেকে ডিলাক্স লাক্সারি বা সুপারফাস্ট ভলভো বাসে করে খুব সহজেই এখানে পৌঁছনো যায়।
কোথায় থাকবেন? Where to Stay?
রেলস্টেশন, বাস স্ট্যান্ড, বিমানবন্দর, বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান, রাজ্য-জাতীয় সড়কের পাশে ও শহর জুড়ে প্রচুর ভালো হোটেল, লজ, রিসর্ট, গেস্ট হাউস রয়েছে। আপনি এই শহরে পৌঁছে স্পট বুকিং করতে পারেন। আগে থেকে অনলাইন বুকিং করতে চাইলে এই পেজের উপরের দিকে দেওয়া বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট লিঙ্কগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
রাজস্থান রাজ্যে ভ্রমণ করার প্রসঙ্গ উঠলেই চোখের সামনে রাজপুত রাজাদের পুরাতন কেল্লা ( Fort ), মরুভূমি, উট এবং আরাবল্লী পর্বতের ছবি চোখের সামনে ভেসে ওঠে। ভালোবাসা, ভক্তি, বিশ্বাস, রক্তপাত, শৌর্য এবং বীর্যে ভরা অসংখ্য কাহিনী এর আকাশে বাতাসে এখনও অদৃশ্য আলোড়ন তুলে চলেছে। মীরাবাঈ-এর প্রেম-ভক্তি ভরা ভজন আর রাজপুত রাজাদের বীরত্বের কাহিনী আজ ইতিহাস হলেও সারা বিশ্বের মানুষের মনে এসবের প্রভাব চিরদিন তরতাজা ছিল, আছে এবং থাকবে। অসামান্য সমস্ত দৃশ্যপট, এখানকার রাজস্থানী সংস্কৃতি এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন সমূহকে চাক্ষুষ করার জন্য সারা বছর ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তই শুধু নয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভ্রমণপিপাসু এবং ইতিহাসপ্রিয় মানুষজন এখানে ছুটে আসে।
এই রাজ্যের রাজধানী হলো জয়পুর ( Capital City is Jaipur )। মোট এলাকা ( Total Area ) বা আয়তন ৩৪২২৩৯ বর্গ কি. মি. ( ১৩২১৩৯ বর্গ মাইল )। মোট জনসংখ্যা ( Total Population ) ৬৮৬২১০১০। প্রতি বর্গ কিলোমিটারে জনঘনত্ব ( Population Density ) ২০০। এখানকার অধিবাসীদের বলা হয় রাজস্থানী ( Rajasthani )। প্রতি ১০০০ পুরুষ পিছু নারীর সংখ্যা ৯২৬ ( Sex Ratio of Male and Female )। সাক্ষরতার হার ( Percentage of Literacy ) ৬৭.০৬%। প্রধান ভাষা ( Main Languages ) হলো হিন্দি, ইংরেজি এবং রাজস্থানী। এছাড়া, অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষা ( Other Local Languages ) হ'ল মারোয়াড়ী, জয়পুরী, মালভি, মেওয়াটি ইত্যাদি। মাথাপিছু বার্ষিক আয় ( Per Head / Per Capita Yearly Income ) ১০৯১০০ টাকা। জনপ্রিয় লোকনৃত্য ( Folk Dance ) ঘুমর ( Ghoomar )। প্রধান পশু উট এবং চিঙ্কারা ( Main Animals are Camel & Chinkaara )।
WHEN SHOULD YOU GO THERE? / BEST TIME TO VISIT OR TRAVEL THIS STATE. AVERAGE WEATHER OR CLIMATE:-
শীত ও গ্রীষ্ম দুইয়েরই যথেষ্ট দাপট আছে এই রাজ্যে। বছরের যে কোন সময় আসা গেলেও এখানে বেড়াবার আদর্শ সময় অক্টোবর মাসের শুরু থেকে মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। মে-জুন মাসের তাপমাত্রা ৪৫° সেলসিয়াসের উপরে থাকে। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত থাকে বর্ষাকাল। এই সময় ভ্রমণের অভিজ্ঞতাও কম রোমাঞ্চকর নয়। এই সময় রুক্ষভাব কিছুটা মলিন হয়ে অনেকটাই সবুজে ভরে ওঠে। লেকগুলিও জলে টইটম্বুর হয়ে থাকে। আবার অক্টোবর মাস থেকে আকাশ মেঘমুক্ত হয়। সূর্যের ঝলমলে আলোয় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে দিন। রাতের আকাশের তারাদের ঝিকিমিকি আর চাঁদের মায়াবী স্নিগ্ধ আলোয় স্নাত হয়ে সমস্ত চরাচর এক অলৌকিক রূপ ধারণ করে ওঠে। অক্টোবর থেকে সকালে এবং সন্ধ্যাবেলায় গরম উলের পোশাক বা হালকা জ্যাকেটের প্রয়োজন হয়। রাতে কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমোতে হয়।
Government Official Website - http://www.rajasthan.gov.in
Tourism Department Official Website - http://www.tourism.rajasthan.gov.in
মোট জেলা ৩৩ ( Total Number of Districts is 33 ) টি। যথা,(1) আজমের ( Ajmer ), (2) আলোয়ার ( Alwar ), (3) বাসওয়ারা ( Banswara ), (4) বারন ( Baran ), (5) বারমের ( Barmer ), (6) ভরতপুর ( Bharatpur ), (7) ভিলওয়ারা ( Bhilwara ), (8) বিকানের ( Bikaner ), (9) বুন্দি ( Bundi ), (10) চিতোরগড় ( Chittorgarh ), (11) চুরু ( Churu ), (12) দৌসা ( Dausa ), (13) ঢোলপুর ( Dholpur ), (14) দুঙ্গারপুর ( Dungarpur ), (15) হনুমানগড় ( Hanumangarh ), (16) জয়পুর ( Jaipur ), (17) জয়সালমের ( Jaisalmer ), (18) জালোর ( Jalor ), (19) ঝালাওয়ার ( Jhalawar ), (20) ঝুনঝুনু ( Jhunjhunu ), (21) যোধপুর ( Jodhpur ), (22) কারাউলি ( Karauli ), (23) কোটা ( Kota ), (24) নাগাউর ( Nagaur ), (25) পালি ( Pali ), (26) প্রতাপগড় ( Pratapgarh ), (27) রাজসামান্দ ( Rajsamand ), (28) সাওয়াই মাধোপুর ( Sawai Madhopur ), (29) সিকার ( Sikar ), (30) সিরোহি ( Sirohi ), (31) শ্রী গঙ্গানগর ( Sri Ganganagar ), (32) টঙ্ক ( Tonk ), (33) উদয়পুর ( Udaipur )।
ALL TOTAL LIST OF 31 VERY BIG, MOST POPULAR OR FAMOUS LOCAL FAIRS & MAJOR FESTIVALS:-
(i) Mewar Festival Udaipur, (ii) Teej Festival Jaipur, (iii) Gangaur Fest & Fair Jaipur, (iv) Elephant Festival Jaipur, (v) Camel Utsav Bikaner, (vi) Dussehra in Kota, (vii) Desert Festival Jaisalmer, (viii) Summer Fest Mount Abu, (ix) Winter Festival Mt. Abu, (x) Rajasthan International Folk Utsav, (xi) Braj Holi Bharatpur, (xii) Shree The Sacred Fest Puskar, (xiii) Adventure Fest Kota, (xiv) Jaipur Literature Mahotsav, (xv) Marwar Utsav Jodhpur, (xvi) Bundi Fest in Bundi, (xvii) Kumbhalgarh Festival, (xviii) Kite Festival Jaipur, (xix) Pushkar Mela Pushkar, (xx) Kolayat Fair Bikaner, (xxi) Nagaur Mela, (xxii) Urs Fair Ajmer, (xxiii) Ramdevra Fair Jaisalmer, (xxiv) Baneshwar Mela Dungarpur, (xxv) Shri Mahavirji Fair Jaipur, (xxvi) The Kaila Devi Mela, (xxvii) Gogaji Mela Hanumangarh, (xxviii) Karni Mata Fair Bikaner, (xxix) Chandrabhaga Fair Jhalrapatan, (xxx) Matsya Festival Alwar, (xxxi) Kabir Yatra Folk Music Carnival Bikaner.
এই রাজ্যের যেকোন জায়গায় যাওয়া আসা, থাকা খাওয়ার ব্যাপারে আগে থাকতে অনলাইন বুকিং-এর জন্য নীচের বিশ্বস্ত ওয়েবসাইটগুলির মধ্যে এক বা একাধিক ব্যবহার করতে পারেন। [ FOR ONLINE BOOKING OF FOODS / FLIGHTS, TRAIN / RAILWAY RESERVATION, HOUSES ON RENT/ FLATS RENTAL / LODGES / RESORTS / HOMESTAYS / TENTS / HOTELS ROOMS IN ANY PLACE WITH DISCOUNT, CHEAP AIR TICKETS, BUS BOOKING, CAR HIRE ]:-
1. https://www.trivago.in
2. https://www.goibibo.com
3. https://www.makemytrip.com
4. https://www.yatra.com
5. https://www.cleartrip.com
6. https://www.tripadvisor.in
7. https://www.ixigo.com
8. https://www.zomato.com
2. https://www.goibibo.com
3. https://www.makemytrip.com
4. https://www.yatra.com
5. https://www.cleartrip.com
6. https://www.tripadvisor.in
7. https://www.ixigo.com
8. https://www.zomato.com
[Good News For all Indian Railway Journey Lovers]:-
পৃথিবীর অন্যতম বিলাসবহুল ও ব্যয়বহুল ( Luxurious & Expensive Train Palace on Wheels) ট্রেনে চেপে ৮ রাত ৭ দিনের রাজা-মহারাজা সাজার শখ পূরণ করতে চাইলে অবশ্যই তা করতে পারেন। প্রাচীন কালের মহারাজাদের রোজকার জীবনের রাজসিক মেজাজের স্বাদ অনুভব করতে পারবেন চলন্ত এই প্রাসাদে। ভারতীয় রেল বিভাগের সহযোগিতায় Rajasthan Tourism Development Corporation অর্থাৎ RTDC-র অভিনব পরিকল্পনায় ১৪ সেলুন যুক্ত এই প্যালেস অন হুইলস্ ট্রেনটি সবচেয়ে বেশি ১০৪ জন যাত্রী নিয়ে আগস্ট মাস থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত বছরের ৯ মাস ধরে প্রতি বুধবার এই ৭ দিন ৮ রাতের যাত্রা শুরু করে নতুন দিল্লি স্টেশন থেকে। তারপর একে একে জয়পুর, সওয়াই মাধোপুর, চিতোর, উদয়পুর, জয়সলমীর, যোধপুর, ভরতপুর ও আগ্রা দর্শন করায়। ৫ তারা হোটেলের সমতুল্য সবরকম বিলাসব্যবস্থা সমেত রাজস্থানি সংস্কৃতির শৈলীর অলঙ্করণে সজ্জিত এই বিশেষ ট্রেনটির যাত্রীভাড়া সংখ্যা, সুযোগ-সুবিধা ও বয়স অনুসারে ৪৫০/- US$ থেকে ২০০০/-US$ দামের মধ্যে ওঠানামা করে। ভারতীয়রা টিকিটের দাম সমমূল্যের ভারতীয় টাকায় দিতে পারবেন। For Booking:- (1) Central Reservation Office, Janpath, New Delhi, Tel- 23321820;(2) Senior Manager, Palace on Wheels, Tourist Reception Centre, Bikaner House, Pandara Road, New Delhi, Tel-23381884; (3) Sr. Manager, Palace on Wheels, Tel - 5115315; (4) RTDC, Jaipur, Central Reservation Office, Ph. - 5114768/69; (5)RTDC, 2 Ganesh Chandra Avenue, Kolkata, Contact - 22132740/9836010235
[ TOP PLACES TO VISIT OR MAJOR TOURIST ATTRACTIONS IN RAJASTHAN, INDIA WITH PROPER TOUR PLAN ON MAIN TRAVEL DESTINATIONS AND OTHER NEAREST BEAUTIFUL SPOTS. ]
বিকানীর ( Bikaner ) - রাজস্থানের রাজধানী জয়পুর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দূরে ২৪০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত আর এক মধ্যযুগের ভারতীয় শিল্প-সংস্কৃতির পীঠস্থান সুন্দর মরুশহর হলো এই বিকানের। কয়েক লাখ লোকের বসবাস এখানে। এছাড়া প্রতি দিন দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটকদের আনাগোনা তো লেগেই রয়েছে। এটি থর মরুভূমিরই অংশ একটি মরুশহর ( Small Part of Thar Desert )। এই শহরের নামকরণ হয়েছে ভাটি রাজপুত যোধপুররাজ রাও যোধার দ্বিতীয় পুত্র সেরা বিকার নাম থেকে। তিনশো বছরের বেশি সময় ধরে যোধা রাজবংশ রাজত্বও করেন এখানে। তবে, আধুনিক বিকানীরের প্রতিষ্ঠাতা বলতে মহারাজা গঙ্গা সিংকে বোঝায়। তিনিই প্রথম শহরে রেলগাড়ি আনার পাশাপাশি গঙ্গা ক্যানাল কাটিয়ে জল এনে সবুজায়নের অর্থাৎ রুক্ষ-শুষ্ক মরুভূূূূূমিকে শস্য-শ্যামলা করে তোলার স্বপ্ন দেখান। তাঁর দেখা স্বপ্ন কিছুটা হলেও আজ সফল হয়েছে। গঙ্গা খাল দিয়ে আনানো জল পেয়ে কৃষিতে অগ্রগতির সাথে সাথে সবুজায়ন বাড়ছে। ভেড়ার লোমজাত উলের শিল্পেও ( Bikaner is Very Famous For Woolen Industry ) যথেষ্ট সমৃদ্ধ এই বিকানের। রেল স্টেশন থেকে ১ কি. মি. দূরে মূল বাসস্ট্যান্ডটি অবস্থিত। এর পাশেই রয়েছে এই শহরের প্রধান আকর্ষণ জুনাগড় দূর্গ ( Junagadh Fort )। বিপরীতে আছে বিকানীর আদালত ( Bikaner Court ) চত্বর। দূর্গের সামনে আছে জুনাগড় ফোর্ট শাহি পার্ক ( Junagadh Fort Shahi Park )। এই পাবলিক পার্কের জ্যুলজিক্যাল গার্ডেন, রতনবিহারী মন্দির ও রসিক শিরোমণি মন্দির হলো এই এলাকার কয়েকটি রমণীয় দ্রষ্টব্য স্থান। উদ্যান এলাকার শেষেই রয়েছে গান্ধী ময়দান। আর একটু এগিয়ে গেলেই দেখতে পাবেন গঙ্গা গোল্ডেন জুবিলী মিউজিয়াম, জৈন মন্দির তুলসী। এই শহরে ভ্রমণের সময় কোন কিছু জানতে বা সাহায্যের জন্য চলে যান পূরণ সিং সার্কেলের RTDC-র Dhola Maru Tourist Lodge-এর সরকারি Tourist Office-এ। লোকমুখে শোনা যায় বহু আগে সরস্বতী নদী বয়ে যেত এই অঞ্চলের উপর দিয়ে। এই শহরের সভ্যতা, সংস্কৃতি ও সমৃদ্ধির বিকাশ শুরু হয় তখন থেকেই। যদিও বর্তমানে এই প্রাচীন নদীটির আর কোন অস্তিত্বই নেই। শহরটি বহু আগে বিশালাকার ৫ দরজা বিশিষ্ট ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ উঁচু প্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিল। পর্যটকদের জন্য এই নগরীর নতুন সংযোজিত আকর্ষণ হলো জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত ঢোলা মারু অর্থাৎ উট উৎসব ( Dhola Maru or Camel Festival )। এই উৎসব উপলক্ষে দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর উট আসে। তারা সুসজ্জিত হয়ে নানা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। ইভেন্টে অংশগ্রহণ করা উটেদের দুলকি চাল ও নৃত্য দর্শকদের আনন্দ দেয়। আর একটি জনপ্রিয় উৎসব হলো গাঙ্গুর ( Gangaur Fair & Festival )। এটি মূলতঃ মেয়েদের সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান। নারীকেন্দ্রিক এই উৎসব হোলির পরদিন শুরু হয়ে ১৮ দিনব্যাপী চলতে থাকে। মেয়েরা শিবপত্নী পার্বতী দেবীর সাথে সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করে ব্রত পালন করেন।
জুনাগড় দূর্গটি ( Junagadh Fort ) হলো শহরের পর্যটন শিল্পের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। ১৫৮৭ থেকে ১৫৯৩ সালের মধ্যে আকবরের সেনাপতি রাজা রাই সিং লাল ও গোলাপি বেলে পাথর দিয়ে এই দূর্গটি নির্মাণ করেন। পরবর্তী শাসকদের সময়ে ধাপে ধাপে ৩৭ টি প্রাসাদের সংযোজন ঘটেছে। উঁচু চওড়া পাঁচিল ও চারপাশে ৩০ ফুট গভীর পরিখা দিয়ে সুুুুুরক্ষিত এই চারকোনা দূর্গটি। প্রায় ১০০০ মিটার চওড়া এই দূর্গে ৩৭ টি বুরুজ ও দুুুটো প্রবেশপথ রয়েছে। পশ্চিমের প্রবেশপথে আবার দুটি গেট। মূল প্রবেশ দ্বারটির নাম সূরজ পোল বা সান গেট। এটি হলুুদ বেলেপাথর দিয়ে তৈরি। ভিতরের দেওয়াল চিত্র, পটচিত্র ও পাথরের কাজ সত্যিই দেখার মতো। লাল নিবাসের স্বর্ণখচিত অলঙ্করণ, চন্দ্র মহলের কাঁচ ও মার্বেলের কারুকার্য, ফুল মহলের রঙীন কাঁচের অভিনবত্ব ও ফুলের বর্ণালী তাক লাগিয়ে দেয়। অনুপ মহলের রাজতিলক অর্থাৎ করোনেশন হলের কাঁচখচিত কাঠের ছাদ, ইতালিয়ান মোজাইক, জাফরি শিল্প অপূর্ব। দেওয়ানি খাসে গিয়ে অস্ত্র ভান্ডার ও বাদল মহলের ছবিতে কৃষ্ণগাঁথা দেখে নিন। মোগলি স্থাপত্যে গড়া সূর্য নিবাস বা দরবার হলে ছবির সংগ্রহ দেখার মতো। এছাড়া, গঙ্গা নিবাস, দূর্গা নিবাস, করণ মহল, শিশ মহল, ছত্তর মহল, বিজলী মহল আপনারই অপেক্ষায় আছে। রাজ পরিবারের গৃহদেবতা শিবঠাকুুুরের হরমন্দিরে অতীতে রাজপরিবারের জন্মদিন ও বিবাহ অনুষ্ঠান হতো। হাজারি দরওয়াজা মিউজিয়়ামে রাজপরিবারের বিভিন্ন স্মারক ও মিনিয়েচার পেইন্টিং দেখুন। সবুজ ও সাদায় মোড়া চীনা টাওয়ার অর্থাৎ চিনি বুুুরুজও আর এক দ্রষ্টব্য। দ্বিতীয় দরজার কাছে দৌলত পোলে সতীদের হাতের ছাপ আর এক বিশেষ আকর্ষণ। গাইডের চার্জসহ টিকিট কেটে এই দূূর্গে ( Junagadh Fort ) ঢুকতে হয়। ক্যামেরা ব্যবহার করলে আলাদা চার্জ লাগে। দীপাবলি ও হোলি উৎসব ছাড়া সকাল ১০ টা থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত খোলা থাকে। প্রবেশপথের রয়্যাল টেক্সটাইল ও পোশাকের সংগ্রহশালা বা মিউজিয়ামটি অবশ্যই ঘুরে নেবেন। সামান্য মূল্যের টিকিটের বিনিময়ে এখানে ঢুকতে হয়। প্রাসাদের ভিতরে হোটেলও আছে।
গঙ্গা গোল্ডেন জুবিলী মিউজিয়াম ( Ganga Golden Jubilee Museum ) - এই বিখ্যাত সংগ্রহশালাটি জুনাগড় দূর্গের বিপরীতে গান্ধী উদ্যান পার হয়ে রাজস্থান ট্যুরিজমের ট্যুরিস্ট বাংলোর কাছে NH-4 - এ অবস্থিত। আপনি এখানে অনেক ব্যতিক্রমী ঐতিহাসিক মূল্যবান সম্পদ দেখতে পারবেন। যেমন, গুপ্তযুগের টেরাকোটা সামগ্রী, কুষাণ ও প্রাক হরপ্পাকালের বিভিন্ন নিদর্শন। মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজা রাই সিংকে দেওয়া উপহার বা নজরানা যেমন, সিল্কের পোশাক ও সাদা মার্বেল পাথরের সরস্বতী দেবী মূর্তির ভাস্কর্য এই মিউজিয়ামের সম্মানকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন সময়ের রাজাদের ব্যবহৃত আবরণ ও আভরণ, মুদ্রার সংগ্রহ, প্রাচীন মৃৎশিল্পের সামগ্রী, অতীতের চিঠিপত্র, নানারকম অস্ত্র, মূর্তি ও প্রচুর সংখ্যক ছবি। হোলি ও দীপাবলি ছাড়া প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত খোলা থাকে। যৎসামান্য মূল্যের টিকিট কেটে Ganga Golden Jubilee Museum-এ ঢুকতে হয়।
লালগড় প্রাসাদ ( Lalgarh Palace - The Red Fort, NH15, Samta Nagar, Bikaner, Rajasthan - 334001 ) - মহারাজা গঙ্গা সিং তাঁর পিতা লাল সিং-এর স্মৃতিরক্ষার্থে ব্রিটিশ স্থপতি স্যুইনটন জ্যাকবের নকশা অনুসারে গেরুয়া রঙের বেলেপাথর দিয়ে ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে এই লালগড় প্রাসাদ বা বিকানেরের রেড ফোর্ট তৈরি করান। এটি শহরের শেষপ্রান্তে Lalgarh Junction Railway Station থেকে মাত্র ১.৫ কি. মি. দূরে অবস্থিত। এই ঐতিহাসিক প্রাসাদ দূর্গে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বৈভব ও স্থাপত্যশৈলীর এক সুন্দর মেলবন্ধন ঘটেছে। এখানকার দর্শনীয় বিষয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো - বেলজিয়াম ঝাড়লন্ঠন, কাট গ্লাসের কারুকার্য, অতি মনোরম জালিকাজ, কার্ভিং, সুন্দর নকশা, পুরাতন ছবির সংগ্রহ, শিকার করা সংরক্ষিত জীবজন্তু, যত্নে সাজানো ফুলের বাগান, বিকানীর স্টেট রেলের বগি, ছোট চিড়িয়াখানা ইত্যাদি। প্রাসাদের মূল অংশে এখনও রাজপরিবারের সদস্যরা বসবাস করছেন। আর এক অংশে লক্ষ্ণীনিবাস প্যালেস হেরিটেজ হোটেল হয়েছে। প্রাসাদের দ্বিতীয় তলায় মহারাজা অনুপ সিং-এর ব্যক্তিগত সংগ্রহশালা পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে। এখানকার অনুপ সংস্কৃত লাইব্রেরিতে দুষ্প্রাপ্য, দুর্মূল্য পান্ডুলিপি এবং গ্রন্থের বিশাল Collections দেখতে পাবেন। আর আছে পারিবারিক ব্যবহৃত সামগ্রীর স্মারক সম্ভারে সমৃদ্ধ শার্দুল সিং মিউজিয়াম। রবিবার সারাদিন বন্ধ। এছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য খোলা থাকে। সামান্য মূল্যের টিকিট কেটে ঢুকতে হবে। ক্যামেরার জন্য আলাদা চার্জ লাগবে।
জৈন মন্দির কমপ্লেক্স ( Jain Temples Complex, Old Bikaner ) - শহর থেকে অল্প কিছু দূরে পুরাতন বিকানীরে জৈনদের পবিত্র তীর্থক্ষেত্র এবং পর্যটকদের অবশ্য দ্রষ্টব্য জৈন মন্দির কমপ্লেক্স চত্বর অবশ্যই দেখে নেবেন। চৌদ্দ শতকের বিভিন্ন সময়ে নির্মিত অনেকগুলি জৈন মন্দির পাশাপাশি অবস্থান করছে। এদের মধ্যে দুটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। একটি হলো ভান্ডেশ্বর ( Seth Bhandasar Jain Temple ) আর অপরটি ষন্ডেশ্বর ( Seth Shandeswar Jain Temple )। দুজন ধনী ব্যবসায়ী ভাতৃদ্বয়ের নামেই এই বিখ্যাত মন্দির দুটি। ভান্ডেশ্বর কাঁচ ও ফ্রেস্কো ছবিতে সুন্দর ভাবে সজ্জিত। ষন্ডেশ্বরের খ্যাতি দেওয়াল চিত্রের কারণে। এই চিত্রগুলি এনামেল ও সোনায় মোড়া। মন্দিরের মাথায় স্বর্ণমন্ডিত পতাকা পতপত করে উড়ছে। ভান্ডেশ্বরের দেবতা হলেন পঞ্চম তীর্থঙ্কর সুমিনাথ আর ষন্ডেশ্বরের দেবতা হলেন তীর্থঙ্কর নেমিনাথ। এছাড়া, চিন্তামণি, নেমিনাথ, আদিনাথ জৈন মন্দিরগুলিও সুন্দর। সকাল ৬ টা থেকে ১১ টা আর সন্ধ্যা ৭ টা থেকে ৮ টা পর্যন্ত এই মন্দির সকল খোলা থাকে। পাশেই রয়েছে লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দির।
দেবী কুন্ড সাগর ( Devi Kund Sagar ) - মূল শহর থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে এই বিখ্যাত রাজ সমাধিস্থলটি অবস্থিত। যতজন রাজপরিবার বিকানের শাসন করেছেন তাঁদের সকলের মিলিয়ে শতাধিক সুন্দর সমাধি রয়েছে এই দেবী কুন্ড স্থানে। এই সমাধিগুলিকে ছত্তিশ বলে। এগুলো বেলেপাথর ও শ্বেতপাথর দিয়ে তৈরি। সবকয়টি স্মৃতি স্তম্ভের মধ্যে রাও কল্যাণমাঈয়ের স্তম্ভটি সবচেয়ে প্রাচীন। মহারাজা করণ সিং, অনুপ সিং, সুরথ সিংদের শ্বেতপাথরে গড়া সুন্দর চিত্রে সুশোভিত ছত্তিশগুলি সত্যিই অতুলনীয়। Devi Kund Sagar-এ শেষ ছত্তিশটি গড়া হয়েছিল ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে।
ক্যামেল ব্রিডিং ফার্ম ( Camel Breeding Farm, National Research Centre on Camel, Jodhpur Bypass, Bikaner, Rajasthan - 334022 ) - শহর থেকে দক্ষিণে কিছুটা দূরে এশিয়ার বৃহত্তম সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার অফ ক্যামেলস আর এক দর্শনীয় স্থান। এটি ১৯৭৫ সালে ২০০০ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত কয়েকশো উটের প্রজনন কেন্দ্র। অটো বা ট্যাক্সি ভাড়া করে ঘুরে আসুন। চাইলে উটের পিঠে চড়তে পারেন এবং উটের মিষ্টি দুধের স্বাদও নিতে পারেন। প্রতিদিন বিকেল ৩ টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। যৎসামান্য মূল্যের টিকিট কেটে এখানে ঢুকতে হয়। ১৯ শতকে তৈরি ডুঙ্গার সিংজির তৈরি করা শিববাড়ি মন্দিরটিও দর্শন করে আসতে পারেন।
দেশনোক করণীমাতা মন্দির ( Karni Mata Temple, Deshnok ) - রাজপরিবারের আরাধ্যা দূর্গার অবতার দেবী করণীজী এখানে শিলারূপে পূজিতা। শ্বেতপাথর দিয়ে তৈরি দ্বিতল এই মন্দিরটি নির্মিত হয় সতেরো শতকে। এর চূড়ায় রয়েছে একটি সোনার ছাতা। মন্দিরটির মার্বেল কার্ভিংস এবং ভাস্কর্য মন্ডিত রূপোর তোরণ বা দরজাটিও খুব সুন্দর। এর অন্যতম বিশেষত্ব ও আকর্ষণ হলো পুরো চত্বর জুড়ে অসংখ্য কাবাস অর্থাৎ সাদা ইঁদুর ঘুরে বেড়ায়। প্রচলিত ধারণা আছে যে যার শরীরে উঠবে তাঁর পুণ্য অর্জন হবে। আর পদপৃষ্ট হয়ে ইঁদুর মারা পড়লে নাকি পাপের সাথে শাস্তিও ধার্য্য হয়। সাদা ইঁদুর দর্শন করলেও নাকি পুণ্যার্জন হয়। স্থানীয় মানুষদের বিশ্বাস যে পুণ্যাত্মারাই পুনর্জন্ম নিয়ে এখানকার কাবাস হয়েছেন। শহরের নতুন বাস স্ট্যান্ড থেকে মন্দির অবধি ঘন ঘন বাস, ট্যাক্সি এবং অটো যাতায়াত করছে। ট্রেনে করেও Deshnok সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায়। বেলা ১২ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত Karni Mata Mandir -এর দরজা বন্ধ থাকে। এখানে কোন থাকার হোটেল পাবেন না।
গজনের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র ও শিকার মহল প্রাসাদ ( Gajner Wildlife Sanctuary and Safari Park With Palace ) - বিকানের শহর থেকে ৩০ কি. মি. জয়সলমীরের পথে গিয়ে পৌঁছে যাবেন মহারাজা গঙ্গা সিং-র গড়ে তোলা শিকার মহল প্রাসাদ। চারিদিকে জঙ্গল দিয়ে ঘেরা কৃত্রিম লেকের পাড়ে গা ছমছমে নিরিবিলি সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশে এই Gajner Palace-টি অবস্থিত। প্রাসাদের আসবাবপত্র, ছবি ও কার্পেটের সংগ্রহ দেখলে আপনি অবশ্যই মুগ্ধ হবেন। এই শিকার মহলে একটি হেরিটেজ হোটেল স্থাপিত হয়েছে ( Gajner Palace Hotel, Tel- 01534 275061 )। আর একটি মিউজিয়ামও রয়েছে। গোলাপ বাগানটিও খুব সুন্দর। রাজা-মহারাজাদের সময় বুনো কুকুর ও হাঁস শিকারের জন্য গজনের বিখ্যাত ছিল। বর্তমানে লেকটিকে ঘিরে ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারি গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে এসে আপনি নীলগাই, চিঙ্কারা, ব্ল্যাক বাক, গজলা হরিণ দেখতে পাবেন। শীতকালে এই লেকে পরিযায়ী পাখিদের ভেসে বেড়াতে দেখা যায়। চাইলে লেকের জলে বোটিং-ও করা যায়। এখান থেকে দেখা সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের শোভা অতুলনীয়। শহর থেকে আধঘণ্টা অন্তর বাস রয়েছে। প্রবেশ করা ও ১ ঘন্টা জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানোর জিপ সাফারির জন্য আলাদা করে মূল্য ধার্য করা আছে।
গজনের থেকে ১৫ কি. মি. দূরত্বে জয়সলমীরের দিকের বাস রাস্তায় হিন্দুদের পবিত্র তীর্থক্ষেত্র কোলায়েত ( Kolayat ) রয়েছে। এখানকার স্থানীয়রা দাবি করেন যে বৈদিক যুগে সাগর দ্বীপে আশ্রম প্রতিষ্ঠার আগে কপিল মুনি এই কোলায়েতেই তাঁর আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে এখানে একটি প্রাচীন মন্দির আছে। প্রতি বছর কার্তিক পূর্ণিমায় এখানে একটি বড়ো মেলা বসে। এটি Kolayat Fair হিসেবে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে পরিচিত। বাসে বা ট্রেনে করে কাছের যেকোন শহর থেকে এখানে সহজেই পৌঁছতে পারবেন।
মোটামুটি দরদাম করে অটো বা ছোট গাড়ি দিনভর প্রোগ্রাম হিসেবে ভাড়া করে মাত্র দুই দিনের মধ্যে পুরো Bikaner শহর ও আশপাশের সমস্ত দর্শনীয় স্থানসমূহ খুব ভালোভাবে ঘুরে ঘুরে দেখে নিতে পারবেন।
এই শহরের সুস্বাদু, জনপ্রিয় ও বিখ্যাত খাবার। ( Famous, Popular and Tasty Foods in This City ) - স্টেশন রোডের অম্বর রেস্টুরেন্টের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। এই রেস্তোরাঁর স্পেশাল দোসার সুখ্যাতি আছে। ছোটুমুটু যোশী রেস্টুরেন্ট বিখ্যাত ও সুনাম অর্জন করেছে বিভিন্ন সুস্বাদু নিরামিষ খাবার, মিষ্টি ও লস্যির জন্য। এটিও স্টেশন রোডে অবস্থিত। এছাড়া আরো প্রচুর নামী, সুখ্যাত খাবারের হোটেল-রেস্তোরাঁ রয়েছে সমস্ত শহর জুড়ে। এগুলো থেকে বাজরার রুটি, ডালমাখানি, মিঠাই ও ভুজিয়ার স্বাদ অবশ্যই নেবেন। সারা বিশ্বে ভুজিয়ার পীঠস্থান হিসেবে সুপরিচিত বিকানীরের ভুজিয়াগলির ভুজিয়ার স্বাদের কোন তুলনাই হয় না। হলদিরাম ও বিকানীর ভুজিয়া ভান্ডারের নাম আজ লোকের মুখে মুখে ফেরে।
কি কি কিনবেন? What are The Things You Should Buy ( Marketing ) While Traveling This City? - আমার মতে, জুনাগড় দূর্গের কাছের মহাত্মা গান্ধী রোড অথবা স্টেশন রোডের দোকান গুলিই হলো কেনাকাটা করার সবচেয়ে সেরা জায়গা। এসব জায়গা থেকে আপনার ভ্রমণের স্মৃতিচিহ্ন স্বরূপ বা নিজের ব্যবহার করার জন্য হাতে ছাপা কটন টেক্সটাইল, ফ্রেস্কো চিত্র, বিভিন্ন রকম হস্তজাত পণ্য, উসতা শিল্প অর্থাৎ উটের চামড়ার জুতো, পার্স, কুশন ইত্যাদি কিনতে পারেন।
কিভাবে যাবেন? How to Reach / Go?
রেলপথে কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই, আহমেদাবাদ, জয়পুর সহ ভারতের যেকোন বড়ো শহরের সাথে বিকানীরের ভালো যোগাযোগ রয়েছে। বিমানে যেতে হলে জয়পুর বা বিকানীর বিমানবন্দরে পৌঁছে তারপর গাড়ি বা বাসে করে শহরে পৌঁছতে হবে। রাজস্থানের বা পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির যেকোন শহর থেকে ডিলাক্স লাক্সারি বা সুপারফাস্ট ভলভো বাসে করে খুব সহজেই এখানে পৌঁছনো যায়।
কোথায় থাকবেন? Where to Stay?
রেলস্টেশন, বাস স্ট্যান্ড, বিমানবন্দর, বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান, রাজ্য-জাতীয় সড়কের পাশে ও শহর জুড়ে প্রচুর ভালো হোটেল, লজ, রিসর্ট, গেস্ট হাউস রয়েছে। আপনি এই শহরে পৌঁছে স্পট বুকিং করতে পারেন। আগে থেকে অনলাইন বুকিং করতে চাইলে এই পেজের উপরের দিকে দেওয়া বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট লিঙ্কগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please, Don't Spam.
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷