সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৯

[ Best Weekend Tour Destinations-Odisha Tourism ]

PAST HISTORY & SOME VALUABLE INFORMATIONS ABOUT ODISHA:-

             পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ-পশ্চিমের প্রতিবেশী রাজ্য হ'ল উড়িষ্যা ( আগে ছিল Orissa )। বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত। সমুদ্র, পাহাড়, অরন্য, মন্দির এবং আদিম উপজাতি -গত দিক দিয়ে এই রাজ্য দেশের অনেক সুন্দর সুন্দর রাজ্যকে রীতিমতো টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। আমাদের বাঙালিদের কাছে অবশ্য ওডিশা ( বর্তমানে Odisha ) বলতে ঐ সেই একঘেয়ে পুরী, কোনার্ক, উদয়গিরি-খন্ডগিরি, গোপালপুর, তালশারির মতো হাতে গোনা কয়েকটি জায়গাই বোঝায়। কিন্তু, অনেকেরই জানা নেই সমগ্র রাজ্য জুড়ে অসংখ্য বৈচিত্র্যপূর্ণ ভ্রমণস্থল আছে। যার মধ্যে কয়েকটি এই সম্প্রতি বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জন করেছে। আর বেশিরভাগ সুন্দর নৈসর্গিক এবং ঐতিহাসিক জায়গাই এখনও Explore-ই হয়নি অথবা মাত্র হাতেগোনা কয়েকজনই জানেন সেগুলি সম্পর্কে। এই রাজ্য খনিজ ও বনজ সম্পদেও অত্যন্ত শক্তিশালী। এই রাজ্যের প্রাকৃতিক শোভাও অতুলনীয়। আর একটি বিশেষ আকর্ষণীয় জিনিস হ'ল এখানকার বিভিন্ন প্রজাতির আদিম উপজাতি বা আদিবাসীরা এবং তাঁদের স্বতন্ত্র আচার-সংস্কৃতি। শুধু তাই নয় উপজাতি গোষ্ঠী অনুসারে পোশাক, পরিচ্ছদ, আচার-অনুষ্ঠান, খাদ্যাভ্যাস প্রভৃতি বিষয়েও যথেষ্ট বৈচিত্র্য আছে। রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ২৩% উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত। ৬২ প্রজাতির আদিবাসী উপজাতি সম্প্রদায়ের বাস এই রাজ্যে। জুলাই থেকে আগষ্ট মাসে পুরীর জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উড়িষ্যার মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত উৎসব। পুরীর Famous Car Festival- এর কথা জানেনা গোটা পৃথিবীতে এমন মানুষ আছে কিনা সন্দেহ। বর্ষাকালে এই উৎসবের সময় সমগ্র পুরীধামে তিলধারণের জায়গা পর্যন্ত থাকে না। তাই অনেক আগে থেকে হোটেল-লজ বুক করে এই রথযাত্রায় আসা ভালো।

       এর রাজধানী ( Capital City ) ভুবনেশ্বর ( Bhubaneswar )। রাজ্যের মোট আয়তন ( Total Area ) ১৫৫৭০৭ বর্গ কিলোমিটার বা ৬০১১৯ বর্গ মাইল। মোট জনসংখ্যা ( Total Population ) ৪৫৯৯০০০০। জনঘনত্ব ( Population Density ) অর্থাৎ প্রতি বর্গ কি.মি.তে বাস করেন ৩০০ জন। এখানকার বাসিন্দাদের বলা হয় ওড়িয়া ( Odia )। প্রতি ১০০০ পুরুষ পিছু নারীর সংখ্যা ৯৮০ জন ( Sex Ratio of Male and Female )। সাক্ষরতার হার ( Percentage of Literacy ) ৭৪%। প্রধান সরকারি ভাষা ( Main Official Language ) ওড়িয়া। এছাড়া, ( Other Languages ) বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি ভাষাতেও এখানকার বাসিন্দারা কথা বলে থাকেন। মাথাপিছু বার্ষিক আয় ( Per Person / Per Capita Annual Income ) ৯৩৩৫০ টাকা। ১৯৩৬ সালের ১লা এপ্রিল হ'ল এর রাজ্য হিসাবে স্বীকৃতি লাভের ঐতিহাসিক সময়।

AVERAGE WEATHER OR CLIMATE. WHEN SHOULD YOU GO THERE? / BEST TIME TO VISIT OR TRAVEL THIS STATE:-

             শীতকালে ঠান্ডা খুব বেশি না পরলেও গ্রীষ্মকালে গরম এবং বর্ষাকালে বৃষ্টির পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। গরমকালে কিছু কিছু অঞ্চলে খরা হয় আর মধ্য জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সময়ে অত্যাধিক বৃষ্টিপাত, বন্যা এবং সামুদ্রিক ঝড়ের কারণে বেশিরভাগ জেলাতেই মাঝে মাঝে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বেড়াবার মরশুম বছরভর হলেও সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ মাস অবধি সময়ই হ'ল এই সুন্দর রাজ্যটি বেড়াবার মনোরম সময়।

Government Official Portal -
https://www.odisha.gov.in

Tourism Related Website -
(1) https://www.odishatourism.gov.in
(2) https://www.orissatourism.org

             মোট জেলার সংখ্যা ৩০ ( Total Number of Districts is 30 )। (1) Cuttack, (2) Sambalpur, (3) Ganjam, (4) Jagatsinghpur, (5) Bargarh, (6) Gajapati, (7) Kendrapara, (8) Jharsuguda, (9) Kandhamal, (10) Jajpur, (11) Deogarh, (12) Bondh, (13) Puri, (14) Balangir, (15) Kalahandi, (16) Khordha, (17) Subarnapur ( Sonepur ), (18) Nuapada, (19) Nayagarh, (20) Dhenkanal, (21) Koraput, (22) Balasore, (23) Angul, (24) Rayagada, (25) Bhadrak, (26) Keonjhar, (27) Nabarangpur, (28) Mayurbhanj, (29) Sundargarh, (30) Malkangiri.

ALL TOTAL LIST OF 33 VERY BIG, MOST POPULAR OR FAMOUS LOCAL FAIRS & MAJOR FESTIVALS:-

(i) Rath Yatra / Car Festival, (ii) Chandan Yatra, (iii) Durga Puja, (iv) Konark Dance Festival, (v) Puri Beach Festival, (vi) Kalinga Mahotsav, (vii) Ekamra Utsav, (viii) Shree Kshetra Utsav, (ix) Rajarani Music Fest, (x) Chaita Parva / Mahabisuva or Pana Sankranti, (xi) Joranda Mela, (xii) Karma Festival, (xiii) Kedu Utsav, (xiv) Taratarini Mela, (xv) Bali Jatra, (xvi) Makar Sankranti Mela, (xvii) Sume Gelirak, (xviii) Adivasi Mela, (xix) Kali Puja, (xx) Kumar Purnima, (xxi) Deepawali / Diwali Utsav on Kartik Amavasya, (xxii) Prathamastami, (xxiii) Vasant Panchami, (xxiv) Maha Shivaratri, (xxv) Dol Poornima and Holi Fest, (xxvi) Ganesh Chaturthi, (xxvii) Raja Parba, (xxviii) Bali Jatra / Kartika Purnima, (xxix) Gajalaxmi Puja, (xxx) Nuakhai, (xxxi) Sitalsasthi, (xxxii) Dhanu Jatra, (xxxiii) Chhau Festival.

এই রাজ্যের যেকোন জায়গায় যাওয়া আসা, থাকা খাওয়ার ব্যাপারে আগে থাকতে অনলাইন বুকিং-এর জন্য নীচের বিশ্বস্ত ওয়েবসাইটগুলির মধ্যে এক বা একাধিক ব্যবহার করতে পারেন। [ FOR ONLINE BOOKING OF FOODS / FLIGHTS, TRAIN / RAILWAY RESERVATION, HOUSES ON RENT/ FLATS RENTAL / LODGES / RESORTS / HOMESTAYS / TENTS / HOTELS ROOMS IN ANY PLACE WITH DISCOUNT, CHEAP AIR TICKETS, BUS BOOKING, CAR HIRE ]:-
1. https://www.trivago.in
2. https://www.goibibo.com
3. https://www.makemytrip.com
4. https://www.yatra.com
5. https://www.cleartrip.com
6. https://www.tripadvisor.in
7. https://www.ixigo.com
8. https://www.zomato.com

TOP PLACES TO VISIT OR MAJOR TOURIST ATTRACTIONS IN ODISHA WITH PROPER TOUR PLAN ON MAIN TRAVEL DESTINATIONS AND OTHER NEAREST BEAUTIFUL SPOTS:-

ভুবনেশ্বর ( Bhubaneswar ) - ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে কটক থেকে স্থানান্তরিত হয়ে ওড়িশার নতুন রাজধানী হয় এই ঐতিহাসিক শহর। বহু পূর্বে এই স্থান কলিঙ্গ রাজ্যের রাজধানী ছিল। এবার আসছি দর্শনীয় স্থানগুলির কথায়। রেল স্টেশন থেকে প্রায় ৪ কি. মি. দূরে রয়েছে বিশ্ববন্দিত লিঙ্গরাজ মন্দির ( Lingaraj Temple )। আরাধ্য দেবতা এখানে স্বয়ম্ভু - আধা শিব ও আধা বিষ্ণু অর্থাৎ স্বর্গ-মর্ত্য-পাতালের অধীশ্বর ত্রিভুবনেশ্বর। গর্ভগৃহে রয়েছে বিশাল শক্তিপীঠের উপর গ্রানাইট পাথরের ছত্রাকার ২.৫ মিটার ব্যাসের লিঙ্গ মূর্তি। দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম হলেন এই লিঙ্গরাজদেব। পুরীর মন্দিরের মতো এখানেও রথযাত্রা, দোলযাত্রা, চন্দনযাত্রা উৎসব পালিত হয়। শিবরাত্রি উৎসবও খুবই ধুমধামের সাথে প্রতি বছর পালন করা হয়। ১০০০ খ্রিস্টাব্দে রাজা যযাতি কেশরীর এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন গঙ্গারাজা ললাট কেশরী। সূক্ষ্ম কারুকার্যময় বেলেপাথরে তৈরি নাগার শৈলীর মন্দিরে লোহা ব্যবহৃত হলেও কোন কাঠের ব্যবহার নেই। কেবলমাত্র হিন্দুরাই এখানে প্রবেশ করতে পারবেন। ক্যামেরা ও চর্মজাত জিনিস নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ। মূল অংশের প্রবেশদ্বার তিনটি। গাত্রের ভাস্কর্যে ফুল-লতা-পাতা ও হিন্দু পুরাণের নানা দেবদেবীর সাথে মিথুন মূর্তিও স্থান পেয়েছে।

লিঙ্গরাজ মন্দির থেকে প্রায় ৮০০ ফুট উত্তরে আছে বিশাল প্রাচীন জলাশয় বিন্দু সাগর বা বিন্দু সরোবর ( Bindu Sagar / Sarovar )। পুরাণ মতে, অতীতে এই স্থানের নাম ছিল একাম্রকানন। শিবপত্নী পার্বতীর খুব প্রিয় জায়গা ছিল এটি। একসময়ে বিহারে বেরিয়ে কৃত্তি ও বাস নামে দুই দৈত্যের কবলে পড়েন। উদ্ধার পেতে দেবী কৌশলে ঐ দুজন দৈত্যকে বধ করেন। তখন দেবী খুবই ক্লান্ত ও তৃষ্ণার্ত বোধ করেন। সেই সময় শিব সেখানে হাজির হলেন এবং পার্বতীর পিপাসা মেটাতে কয়েক মুহূর্তে এই সরোবরটি তৈরি করেন দেবাদিদেব। তাঁর আহ্বানে সমস্ত নদ-নদী-সরোবর বিন্দু বিন্দু করে জলদান করে। সেই কারণেই এর নাম হয় বিন্দু সরোবর। প্রচলিত আছে, এখানকার জল খুবই পবিত্র। স্নানে সর্বপাপ নাশ হয়। অশোকাষ্টমীর জন্মোৎসবে লিঙ্গরাজ মন্দিরের দেবতাকেও এই জলাশয়ে স্নান করানো হয়। শীতকালে প্রচুর পরিযায়ী পাখি আসে এই লেকে। বর্তমানে বটানিক্যাল রিসার্চ সেন্টার হয়েছে একাম্রকানন অর্থাৎ একাম্রবনে ( Ekamravan )। রোজ গার্ডেন ও ক্যাকটাস গার্ডেন দুটিও খুব সুন্দর।

বিন্দু সাগরের পূর্ব পাড়ে আর এক দ্রষ্টব্য হলো অনন্ত বাসুদেব মন্দির ( Ananta Basudeva Temple )। সুন্দর কারুকার্যমন্ডিত ৬০ ফুট উঁচু প্রাচীন এই মন্দিরের আরাধ্য দেবতা হলেন বিষ্ণু। মন্দিরের এক শিলালিপিতে ভবদেব ভট্টর নাম পাওয়া যায়। মনে হয় ইনিই হলেন এই দেবালয়ের প্রতিষ্ঠাতা। কিন্তু, তাত্ত্বিকদের মতে ভবদেব ভট্টর হাতে এই দেবস্থানের সংস্কার হয়। তাঁদের মতে, প্রকৃতপক্ষে এই অনন্ত বাসুদেব মন্দিরটি ১২৭৮ খ্রিস্টাব্দে অনঙ্গ ভীমদেবের কন্যা চন্দ্রাদেবীর তত্ত্বাবধানে তৈরি।

জায়গার নাম সিদ্ধারণ্য বা সিদ্ধ অরণ্য। ভুবনেশ্বর থেকে পুরীগামী রাস্তায় আম্রকাননে ঘেরা সুস্বাদু জলের প্রস্রবণ। আমের বন আজ আর নেই। তবে, ৪৬ বাই ২০ হাতের কেদার-গৌরী বা গৌরীকুন্ড প্রস্রবণটি ( Gaurikund Water Spring ) আছে। কেদার-গৌরীর পাড়ে ২০ হাতের মতো উঁচু কারুকার্যমন্ডিত মুক্তেশ্বর মন্দির ( Mukteshwar Temple ) অবস্থিত। এই বেলেপাথরের শিব মন্দিরটি ১০ম শতকে নির্মিত। ভাস্কর্যে বৌদ্ধ-জৈন-হিন্দু স্থাপত্যের সমন্বয় ঘটেছে। ভাস্কর্যমন্ডিত গেট দিয়ে ঢোকার সময় দেখতে পাবেন বৌদ্ধ আঙ্গিকে পদ্মাকার চন্দ্রাতপ। প্রতিটি পাপড়ির আঙ্গিকে রয়েছে একটি করে দেবমূর্তি। অদ্ভুত এর গড়নে পঞ্চতন্ত্রের আখ্যান মূর্ত হয়েছে। জানালার জাফরি শিল্প, ব্যাস রিলিফে হাতি ও ঘোড়ার মিছিলেও অভিনবত্ব আছে। বৈচিত্র্যে ভরা সপ্তমাতৃকা, নবগ্রহের মূর্তিও রয়েছে মুক্তেশ্বরে। মন্দিরের পূর্বে রয়েছে আয়তাকার মারীচি কুন্ড ( Marichi Kund )। এখানে স্নান করলে নাকি বন্ধ্যাত্ব নাশ হয়! একই চত্বরে মুক্তেশ্বর মন্দিরের উত্তর-পশ্চিমে আছে ১১ শতকের অসম্পূর্ণ তৈরি হওয়া সিদ্ধেশ্বর মন্দির ( Siddheshwar Temple )। এখানে দেবতা গণেশের যে দাঁড়ানো মূর্তিটি আছে সেটি দেখতে খুব সুন্দর। এর কাছে বিশাল বটবৃক্ষের তলায় পরশুরামেশ্বর শিব মন্দির ( Parashurameshwar Shiva Temple ) রয়েছে। হিন্দুধর্মের নবজাগরণের প্রতীক সিমেন্ট ছাড়া তৈরি ১৩ মিটার উঁচু এই সুপ্রাচীন ওড়িশি শৈলীর মন্দিরে আছেন আয়তাকার জগমোহন, মৌচাকের আদলে দেউল। প্যানেলে আছে বৌদ্ধ আঙ্গিকের লাকুুুলিসা। উত্তর-পশ্চিমে আছে সহস্রলিঙ্গম। রামায়ণ, মহাভারত ছাড়াও নানা পৌরাণিক আখ্যান মূর্ত হয়েছে মন্দিরের দেওয়ালে। পরশুরামেশ্বরের দক্ষিণে অবস্থিত বিধ্বস্ত স্বর্ণজলেশ্বর মন্দির। কাছেই কোটিতীর্থ পবিত্র পুকুর। ৪৫ ফুট উঁচু কেদার-গৌরী মন্দিরটি ষষ্ঠ শতকে নির্মিত। কেদার-গৌরীতে রয়েছেন সিংহের পিঠে দাঁড়িয়ে থাকা দেবী দুর্গা। ৮ ফুট উঁচু পবনপুত্র হনুমানও রয়েছেন। কেদারেশ্বরে ঢুকতে বামহাতে রয়েছে দুধগঙ্গা ( Doodhganga )। জনশ্রুতি আছে, এর জলে নানা রোগের উপশম হয়। মন্দিরের যেন কোন শেষ নেই এই শহরে। সিদ্ধারণ্যের অদূরে বাগানের মধ্যে থাকা ১১ শতকে তৈরি ৫৮ ফুট উঁচু অসম্পূর্ণ রাজারানী মন্দিরের কারুকার্যও খুব সুন্দর। লতাপাতার মাঝে গাছে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে অলঙ্কারভূষিতা সুন্দরী নারীমূর্তি, নানা ভঙ্গিমার নরনারীর মিথুুন মূর্তি, দেবদেবীর ভাস্কর্য। কুলুঙ্গিতে রয়েছে হাতি-সিংহ। থামগুলিও খুব সুন্দর কারুকার্য করা। পিরামিডের আকারের দেবালয়। পিছনের দিকে শিখর। অষ্টদিকের আট দিকপাল দেবতার পাহারায় রয়়েছেন। এর নামকরণ নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। কারও মতে, বাদামি রঙের রাজা ও হলুদ রঙের রানিয়া পাথরে মন্দির নির্মিত হওয়াতে এর এই নাম হয়েছে। আবার অনেকের মতে, রানীর ইচ্ছায় রাজা উদ্যতকেশরী তাঁর মায়ের জন্য এই মন্দির তৈরি করেন। সেই কারণে এই নাম। বর্তমানে দেবতাহীন হলেও বহু পূূর্বে এটি শিব মন্দির ছিল বলেই মনে হয়। টিকিটের মূূূল্য অতি সামান্য। 

এখান থেকে ১ কি. মি. পূর্বে রয়েছে ১০৬০ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত দক্ষিণী গোপুরমধর্মী খাখারা শৈলীর ব্রহ্মেশ্বর মন্দির ( Brahmeswara Temple )। সুন্দর ভাস্কর্যমন্ডিত এই পুরাতন মন্দিরে অভিনব চটুল ভঙ্গিতে নৃত্যরতা সুন্দরী, শৃঙ্গার মূর্তি দক্ষতার সাথে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। জগমোহনের চন্দ্রাতপটি ফোঁটা পদ্মের আকারের। সকলের প্রবেশাধিকার আছে। উল্টোদিকে রয়েছে অসম্পূর্ণ ভাস্করেশ্বর মন্দিরে ৩ মিটার উঁচু লিঙ্গমূর্তি। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে এটি মৌর্যযুগের স্তম্ভ। শিখর ১৮ মিটার উঁচু। এখানে আছেন দেবী লক্ষ্মী, তান্ত্রিক শৈলীর চামুণ্ডা দূর্গা, নন্দী, অষ্টদিকপাল ছাড়াও আরও নানা দেবদেবী। পশ্চিম দিকে ষাঁড়ের পিঠে বীণা বাদনরত নটরাজ মূর্তিতেও অভিনবত্ব রয়েছে। সামান্য পূর্বে আছে মেঘেশ্বর মন্দির। এরপর মাঠ পার হয়ে শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ধৌলীর বিপরীতে খনন করে মাটির তলা থেকে পাওয়া সম্রাট অশোকের সময়ের প্রাচীরবেষ্টিত নগরী শিশুপালগড় ( Sisupalgarh ) ঘুরে আসতে পারেন। খননের সময় এখান থেকে কুষাণ যুগের মুদ্রাও পাওয়া গেছে। কলিঙ্গ সম্রাট খরবেলার রাজত্ব ছিল এই শিশুপালে। তখন নাম ছিল তোষালি। শহর থেকে প্রায় ১৩ কি. মি. দূরে হীরাপুরে নবম শতকে নির্মিত গোলাকার যোগিনী মন্দিরটিও অবশ্যই দেখে নেবেন। 

হোটেল অশোক কলিঙ্গের উল্টোদিকে কল্পনা স্কোয়ারে ওড়িশার স্থাপত্য, ভাস্কর্য, আভরণ, আবরণ, বাদ্যযন্ত্র, অস্ত্রশস্ত্র, মুদ্রা ও পুরাতত্ত্বের বিশাল সম্ভার নিয়ে গড়ে উঠেছে উড়িষ্যা স্টেট মিউজিয়াম ( Full Address:- Odisha State Museum, Near Lewis Rd, Kalpana Square, BJB Nagar )। উপরে উল্লেখিত জিনিস ছাড়াও উপজাতি গোষ্ঠীর তৈরি করা ও ব্যবহৃত সামগ্রী, নানা শিল্পীর ছবি, জয়দেবের গীতগোবিন্দ, তালপাতার পান্ডুলিপিও এখানে রয়েছে। সোমবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। সেক্রেটারিয়েট রোডে আছে হ্যান্ডিক্রাফটস মিউজিয়াম ( Handicrafts Museum ), সায়েন্স মিউজিয়াম ( Science Museum )। এগুলি রবিবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা অবধি দর্শন করা যায়। NH-5 এর পাশে প্ল্যানেটরিয়াম ( Planetarium ) রয়েছে, যেখানে সোমবার বাদে প্রতিদিন বিকেল ৩ টা ও সাড়ে ৪ টায় প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়। শহরের উত্তর-পশ্চিমে CRP Square-এ আছে তপশিলি জাতি ও উপজাতি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ( SCSTRTI - Schedule Castes and Schedule Tribes Research and Training Institute, CRP Square, Near CRP Fire Station Road, Unit - VIII )। এখানে এসে উপজাতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কিত অনেককিছু জেনে নিতে পারেন। এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি রবিবার ছাড়া অন্যদিন সকাল ১০ টা হ'তে বিকেল ৫ টার মধ্যে দর্শন করা যায়। এছাড়াও এই শহরের রবীন্দ্রমন্ডপ, বিড়লা গ্রুপের রাম মন্দির, নয়াপল্লির ইসকনের মন্দির, ইন্দিরা গান্ধী পার্কও দেখে নেওয়া উচিত হবে। 

নন্দনকানন ( Nandan Kanan Zoo Safari Park ) - শহর থেকে ২০ কি. মি. উত্তরে ভুবনেশ্বর-কটক সড়কে চন্দকা অরন্যে ৪২৬ হেক্টর জুড়ে তৈরি করা বটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানা অবশ্যই দেখে নেবেন। মাঝে কাঞ্জিয়া লেক আছে। এই লেকে বোটিং-এর ব্যবস্থা আছে। বিশ্ববিখ্যাত এই নন্দনকাননে দুশোরও বেশি বাঘ, সাদা কুমির, সাদা বাঘ, গরিলা, ইগোয়ানা, কাঠবিড়ালি, ব্ল্যাক প্যান্থার, লেপার্ড, গন্ডার দেখে আপনি মুগ্ধ হবেন। লায়ন সাফারি পার্কে ( Lion Safari Park ) সুরক্ষিত ব্যাটারি চালিত সাফারি বাসে শাল-সেগুনে ছাওয়া অরণ্যপথে যেতে যেতে সিংহের খাদ্যগ্রহণ ও রোজনামচা দর্শনে জীবনের এক অনন্য অভিজ্ঞতা হবে। ঘেরা গাড়িতে করে সাদা বাঘের সাফারিতে ( White Tiger Safari ) বেড়িয়ে সাদা বাঘের রাজকীয় চলাফেরা দেখা যায়। বটানিক্যাল ক্যাকটাস বাড়িটিও ( Botanical Cactus House ) আর এক অনবদ্য দ্রষ্টব্য। প্রবেশ পথের ওয়াইল্ডলাইফ মিউজিয়ামটিও ( Wildlife Museum ) দেখার মতো। এখানে শীতকালে প্রচুর পরিযায়ী পাখির ( Migratory Birds ) আগমন ঘটে। হাতি, টয়ট্রেন, লেকের উপর দিয়ে রোপওয়ে চড়ার ব্যবস্থা আছে। সারা বছর সোমবার বন্ধ থাকে। অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত অন্যান্য প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আর বাকি মাসগুলোতে সকাল সাড়ে সাতটা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা অবধি খোলা থাকে। দর্শনী, সাফারি, হাতিচড়া, টয়ট্রেন, বোটিং ও গাইডের জন্য আলাদা করে খরচ করতে হবে। আর আছে চন্দকা হস্তী অভয়ারণ্য ( Chandaka Elephant Reserve Forest )। 

ভুবনেশ্বর-কটক রেলপথের বরাং রেলস্টেশন থেকে ২ কি. মি. রাস্তা পায়ে হেঁটে বা রিকশায় পৌঁছে যাওয়া যায় এখানে। ভুবনেশ্বর বাস স্ট্যান্ড থেকে সকাল সাড়ে ৯টায় নন্দনকানন স্পেশাল নামের এক বাস ছাড়ে। প্রাইভেট ও প্যাকেজ ট্যুরের বাসে করেও যাওয়া যায়। থাকার জন্য রয়েছে Tourist Cottage ও Forest Rest House. Contact For Online Booking:- Assistant Conservator of Forest, Nandankanan, P. O. - Barang, District - Cuttack. 

ভুবনেশ্বর থেকে ২২ কি. মি. দূরে নন্দনকাননের পথে কটক-খুরদা জেলায় রয়েছে চন্দকা ডোমপাড়া অভয়ারণ্য ( Chandaka Dompada National Park / Elephant Reserve Forest )। এর প্রবেশদ্বার হলো গৌরীবাড়ি ( Gauribari )। পাহাড়ি চিরহরিৎ এই অরণ্যে অনেকগুলো জলাশয় আছে যেখানে হাতি, চিতা, শম্বর ইত্যাদি বন্যপ্রাণীরা জলপান করতে আসে। বাহারি প্রজাপতি ও রঙবেরঙের বিভিন্নরকম পাখি ঘন সবুজ নিবিড় এই বনভূমির সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তোলে। প্রচুর বানর এবং হনুমানও আছে। শীতকালে প্রচুর পরিযায়ী পাখির দেখা মেলে। অ্যামবিলো ও কুমারকুঠিতে ওয়াচ টাওয়ার ( Watch Tower ) আছে। এর উপরে উঠলে এই বনাঞ্চলের অনেক দূর পর্যন্ত দেখা যায়। ওয়াচ টাওয়ারে বিশ্রামও নিতে পারবেন। চন্দকায় প্রাচীন মন্দির ও গঙ্গারাজাদের দূর্গও রয়েছে। অরন্যে প্রবেশ ও গাড়ির জন্য আলাদা করে টিকিট কাটতে হয়। গৌরীবাড়ির Forest Rest House-এ থাকা ও জঙ্গলে ঘোরার অনুমতির জন্য যোগাযোগ করুন ( Contact For Permission ) - DFO, Chandaka Wildlife Division, Plot - 8, Sahidnagar, Bhubaneswar - 751007. Telephone - (0674) 2551600/9438879488, Fax - (0674) 2565062. রান্না করার কাঁচামাল সঙ্গে নিয়ে যাবেন। চন্দকায় আসার উপযুক্ত সময়সীমা হলো অক্টোবর থেকে মার্চ মাস। 

খন্ডগিরি ও উদয়গিরি পাহাড় ( Khandagiri and Udayagiri Hills ) - কলকাতা-চেন্নাই জাতীয় সড়কের ধারে খন্ডগিরি পুলিশ স্টেশনের খুব কাছে পূর্বঘাট পর্বতমালার একই পাহাড়ে মুখোমুখি রয়েছে ৪৪ টি বৌদ্ধগুহা নিয়ে উদয়গিরি এবং ১৯ টি জৈনগুহা নিয়ে খন্ডগিরি ( Udayagiri and Khandagiri Caves )। পাশেই বাসস্ট্যান্ড। দুই গুহারই উচ্চতা কমবেশি ১১৫ ফুট। গুহার সংখ্যা ও আকর্ষণে উদয়গিরি শ্রেষ্ঠ। সম্ভবত বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের বসবাস ও সাধনার জন্য তৈরি করা হয়। খন্ডগিরিতে তীর্থঙ্কর মহাবীরের, পার্শ্বনাথের ও হিন্দুদের মন্দির আছে। নর্তকী নারী, হাতি ও নানা মূর্তি খোদিত জৈন সাধুদের বসবাসের জন্য গুম্ফা নিয়ে রয়েছে জৈন সম্রাট খরবেলার তৈরি করা খন্ডগিরি। এর চূড়া থেকে বিমানবন্দর, লিঙ্গরাজ ও ধৌলীও দৃশ্যমান। পুরো এলাকা জুড়ে প্রচুর সংখ্যক কালো মুখের হনুমানেরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। এদের যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। প্রতি বছর জানুয়ারি মাসের শেষে এই দুই পাহাড়ে এক সপ্তাহব্যাপী সাধু সম্মেলন এখানকার আর এক আকর্ষণীয় দ্রষ্টব্য। 

একবার টিকিট কেটে দুই জায়গা একসাথে দর্শন করা যায়। অরণ্য ভেদ করে গাছপালা সরিয়ে পথ চলতে হয়। দুই গিরি সঠিকভাবে দর্শন করতে হলে যথেষ্ট ধৈর্য ও সময় দুইয়েরই প্রয়োজন আছে। পুরী অথবা ভুবনেশ্বর দুই শহর থেকেই বাস, ট্যাক্সি, অটো বা প্যাকেজ ট্যুরে সহজেই দেখে নিতে পারবেন। 

ধৌলী ( Dhauli Hill ) - উড়িষ্যার রাজধানী শহর থেকে পুরী যাওয়ার রাস্তায় ৫ কি. মি. গিয়ে তারপর ধৌলীচক থেকে ৩ কি. মি. পায়ে হেঁটে, রিকশা, অটো, ট্যাক্সি বা প্যাকেজ ট্যুরে ডাইনে যেতেই পড়বে ধৌলী পাহাড়। খ্রিস্টপূর্ব ২৬১-তে এখানেই কলিঙ্গ রাজা ও সম্রাট অশোকের সেই বিখ্যাত ঐতিহাসিক যুদ্ধটি হয়। এই যুদ্ধে প্রচুর প্রাণহানি হয়েছে দেখে অনুশোচনায় দগ্ধ হয়ে সম্রাট অশোক শপথ নেন যে আর কোন যুদ্ধ নয় তিনি যা করবেন তা প্রেম ও ভালোবাসা দিয়েই করবেন। এখানে আসলে দেখবেন পাহাড়ের পাদদেশে ৫ মিটার বাই ৩ মিটার একটি পাথরের খন্ডে ব্রাহ্মীলিপিতে ১৩ টি রাজাজ্ঞা খোদিত রয়েছে। তিনি বলেছিলেন, সমস্ত মানুষই আমার সন্তান। জাপান ও কলিঙ্গের বৌদ্ধ সঙ্ঘ ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে অনুচ্চ ধৌলীর মাথায় শ্বেত শুভ্র শান্তি স্তুপ বা পিস্ প্যাগোডা ( Dhauli Shanti Stupa - Peace Pagoda - Buddhist Monastery ) এবং বুদ্ধ মূর্তি উদ্যান ( Buddha Statue Park ) তৈরি করেন। এই পার্কে গৌতম বুদ্ধের চার ধর্মী চার মূর্তি হয়েছে। এই মনাষ্ট্রিকে সদধর্ম বিহারও বলা হয়। আর আছে সুপ্রাচীন ধবলেশ্বর শিবের মন্দির। নিচু দিয়ে বয়ে চলেছে রক্তরঙা দয়া নদী ( Daya River )। Odisha Tourism Development Corporation দুই ঘরের একটি পান্থনিবাস ( Panthanivas ) গড়ে তুলেছে এখানে। 

রাজধানী থেকে ১২ কি. মি. দূরের হীরাপুরে রয়েছে ধূসর রঙের ক্লোরাইট পাথরের তৈরি ছোট প্রাচীন চৌষট্টি যোগিনী মন্দির ( Chausathi Jogini Temple, Hirapur )। ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে খনন করে আবিষ্কারের আগে নবম শতকের এই চৌষট্টি যোগিনী মন্দিরটি সুদীর্ঘকাল লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিল। দর্শনের সময়সীমা হলো সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত। 

পিপলি ( Pipili is Famous For Beautiful Applique Handicrafts ) - বর্ণবৈচিত্র্যে, শিল্পসুষমায় Odisha-র পিপলির অ্যাপ্লিক শিল্পকলা অতুলনীয়। বাসপথে পড়বে দর্জিশাহী মহল্লা ( Darjishahi Mahalla, Pipili )। এখানে সারি দিয়ে রয়েছে বাড়ি, দোকানপাট। এখানে আসলে দেখা ও কেনা একসাথে হয়ে যাবে। হাতের কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, - জগন্নাথ দেবের আসবাবপত্র, ছাতা, রকমারি ব্যাগ, ঘর সাজানোর টুকিটাকি ইত্যাদি। পুরীর দোকানগুলো থেকে পিপলির অ্যাপ্লিক জিনিস কিনতে পারবেন। পুরী থেকে উত্তরে এক ঘন্টার বাসযাত্রায় এখানে পৌঁছতে পারবেন। ঘনঘন বাস সার্ভিস চালু আছে। 

অত্রি উষ্ণ জলের প্রস্রবণ ( Atri Hotspring ) - ভুবনেশ্বর থেকে কমবেশি ৪০ কি. মি. পশ্চিমে অবস্থিত অত্রি বিখ্যাত গরম জলের প্রস্রবণের ( Hot Water Spring ) জন্য। জলের উষ্ণতা প্রায় ৫৫° সেন্টিগ্রেড। এই জলে সালফার বেশি থাকার কারণে নানারকম চর্মরোগের উপশম হয়। যাওয়ার পথে বাঘামারিতে হটকেশ্বর দেবের মন্দির ( Lord Hatakeswar Temple, Baghamari, Atri Road ) আছে। 

কি কি কেনাকাটা করা যাবে? What are The Things You Should Buy ( Marketing ) While Traveling in Bhubaneswar? 

ভ্রমণের স্মারকরূপে ওডিশার হস্তশিল্প ও তাঁতশিল্প সামগ্রী সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন। ইক্কত ফেব্রিকের কাজ, পামপাতার কারুকার্য, বালাকাটির কাঁসার বাসন, ফিলিগ্রি করা রুপোর গয়না বাড়িতে নিয়ে যেতে পারেন। কেনাকাটা করার আদর্শ জায়গা হলো জনপথ বা রাজপথে অবস্থিত মার্কেট বিল্ডিং কমপ্লেক্সে, স্টেট এম্পোরিয়াম উৎকলিকা, ওড়িশা স্টেট হ্যান্ডলুম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন, জে. এন. মার্গের উড়িষ্যা স্টেট হ্যান্ডলুম উইভার্স কো-অপারেটিভ, মহিলা বিকাশ সমবায় নিগম ও ব্যক্তিগত মালিকানার প্রচুর দোকানপাট রয়েছে। এই শহরের দোকানপাট এলাকাভেদে রবিবার অথবা বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকে। 

কনডাকটেড ট্যুর ( Conducted Tour Programmes ) - সোমবার ছাড়া প্রতিদিন ভুবনেশ্বর পান্থনিবাস ( OTDC, Transport Unit, Panthanivas, Tel - 0674 2431515 /  Central Reservation Counter, 0674 2430764 ) থেকে শহরের মধ্যের ও বাইরের ভ্রমণস্থলগুলি বিভিন্ন মূল্যের প্যাকেজ ট্যুরে ঘুরিয়ে দেখানো হয়। নানারকম গাড়িও ( A/C or Non A/C ) এদের কাছ থেকে সুলভ মূল্যে ভাড়ায় পেয়ে যাবেন। পান্থনিবাস ছাড়াও রেলস্টেশন ও বিমানবন্দরে OTDC - এই সরকারি দপ্তরের অফিস বসেছে। Lewis Road-এ Paryatan Bhawan-এর 2nd Floor-এ India-র Central Government-এর Tourist Office বসেছে। এদের Contact করার Phone Number হ'ল 0674 2432203. এদের মাধ্যমে অথবা প্রাইভেট ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে  গাড়িতে বা প্যাকেজ ট্যুরে আশেপাশের পর্যটন স্থলগুলি ঘুরে দেখতে পারেন। রিকশা বা অটোরিক্সা ভাড়া করে একদিনে বা দুইদিনে মন্দিরগুলি দেখে নিন। 

খাদ্যাদি ( Foods ) - ওড়িশার প্রধান খাদ্য ভাত ও মাছ। খাদ্যাভ্যাসে অনেকটা বাংলারই মতো। তবে, মন্দিরাদিতে ও পূজার ভোগ নিবেদনে স্থানীয়দের মধ্যে শুধুমাত্র নিরামিষ খাবারেরই প্রচলন আছে। স্টেশন স্কোয়ারের আনারকলি ও ভিনিথ হোটেল-রেস্টুরেন্টের সুনাম রয়েছে ভেজ মিলের জন্য। পুষ্পক হোটেলের পদ্মা, কল্পনা স্কোয়ার, শহীদনগরের স্বপনপুরী, ২১৭ বাপুজি নগরের ভেনাস ইন - এদের সুখ্যাতি নানাধরনের উৎকলীয়-ওড়িয়া খাবার পরিবেশনার কারণে। লিঙ্গরাজ মন্দিরের ওডিশি ধারার অন্নভোগের স্বাদ অতুলনীয়। শহরে প্রচুর সংখ্যক দক্ষিণ ভারতীয় নিরামিষ খাবারের হোটেল আছে। যেমন, রাজমহলের পিছনে Modern South Indian Hotel, Hare Krishna Restaurant - এই দুটি জায়গায় সঠিক দামে ভালো মানের ভেজ খাবার পেয়ে যাবেন। 6 Janpath এ Prachi Hotel-এর Surya Restaurant-এ ভারতীয়, চীনা, কন্টিনেন্টাল ও মোগলাই খাবার পাওয়া যায়। খাঁটি বাঙালি খানার জন্য কটক রোডের Bhubaneswar Hotel-এ চলে যান। মিষ্টির স্বাদ পেতে হলে চলে আসুন স্টেশন স্কোয়ারের New Ganguram Sweets-এ। 

কিভাবে যাবেন? How to Reach / Go? 

ভারতের প্রধান চারটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ আশেপাশের রাজ্যগুলির বিমানবন্দরের সাথে এই শহরের Biju Patnaik International Airport-এর সরাসরি বিমান যোগাযোগ রয়েছে। সড়কপথে ওড়িশার অন্যান্য অঞ্চল ও পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির সাথে বাসগাড়ির মাধ্যমে ভালো যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থা অনেক বছর আগে থেকেই গড়ে উঠেছে। কলকাতা-চেন্নাই জাতীয় সড়ক এই শহরের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। রেলপথে সমগ্র ভারতের সাথে সুন্দর যোগাযোগ আছে। বিশেষ করে কলকাতা-হাওড়া রেলস্টেশন থেকে ছাড়া দক্ষিণ ভারতগামী সকল ট্রেন এই শহরের স্টেশনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে তারপর এগোয়। এখান থেকে পুরী শহরের দূরত্ব কমবেশি ৭০ কি. মি.। 

কোথায় থাকবেন? Where to Stay? 

শহরের প্রধান রেলস্টেশন ও বাসস্ট্যান্ড প্রায় কাছাকাছি অবস্থিত। এই দুইয়ের মাঝামাঝি অবস্থান করছে কল্পনা চক। আর রয়েছে স্টেশন স্কোয়ার। এই সবকয়টি জায়গাগুলির আশেপাশে প্রচুর সাধারণ ও মাঝারি মানের হোটেল রয়েছে। আর বিলাসবহুল তারকাখচিত হোটেলগুলি রয়েছে সারা শহর জুড়ে। অনলাইনে বুকিং করে আসতে পারেন অথবা এসে স্পট বুকিং করতে পারেন। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Please, Don't Spam.

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷