মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৯

[ All Exclusive Tourist Spots in Karnataka Tourism ]

PAST HISTORY & SOME VALUABLE INFORMATIONS ABOUT KARNATAKA:-   

             বর্তমান সময়ে সমগ্র ভারতে যে চারটি রাজ্য পর্যটন শিল্পের জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে তার মধ্যে একটি এটি। আমাদের কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের কাছেও দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যটি সুপরিচিত এই কারণে যে ভ্রমণ, শিক্ষা, প্রযুক্তি, ব্যাবসা, চিকিৎসা ইত্যাদি নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনে কর্ণাটকে আসতে হয়। তাই রেল ও বিমান পরিষেবা রয়েছে কলকাতা ( Kolkata ) ও ব্যাঙ্গালোরের ( Bengaluru / Bangalore ) মধ্যে। ১৯৫৬ সালের ১লা নভেম্বর কানাড়া ভাষার ভিত্তিতে এর রাজ্য হিসাবে স্বীকৃতি লাভ। তার আগে এর নাম ছিল মহীশূর। উচুঁ-নীচু পাহাড়, সুন্দর সুন্দর বনভূমি, বিভিন্ন জলপ্রপাত, ওয়াইল্ডলাইফ স্যাঙ্চুয়ারি, কাবেরী, তুঙ্গভদ্রা ও কৃষ্ণা নদী দ্বারা পরিবৃত এই অনিন্দ্যসুন্দর রাজ্যটি। এই সৌন্দর্যকে আরো খানিকটা বৃদ্ধি করেছে পশ্চিমে আরব সাগরের তীরের কয়েকটি সমুদ্র সৈকত এবং অসংখ্য প্রাচীন মন্দির, মসজিদ, গীর্জা, গুম্ফা ও স্মৃতিসৌধ। আরো রয়েছে সুন্দর সাজানো চা-কফি-মশলা ও রাবার বাগান। আছে কয়েকটি বিশাল লেক ( Lakes ) ও জলাধারও ( Dams / Water Reserves )। এককথায় বৈচিত্র্যে ভরা এই সুন্দর রাজ্যটি। কর্নাটক শব্দটি এসেছে  কানাড়া ভাষার করনাডু শব্দটি থেকে। যার অর্থ অত্যুচ্চ ভূমি। পাঁচ লক্ষ বছর পূর্বের নিদর্শনও মিলেছে কৃষ্ণা নদীর উত্তর অংশে।

             এর রাজধানী ( Capital City ) ব্যাঙ্গালোর ( Bangalore / Bengaluru )। এটিই আবার রাজ্যের বৃহত্তম শহরও ( Largest City )। মোট এলাকা ( Total Area ) বা আয়তন ১৯১৭৯১ বর্গকিলোমিটার বা ৭৪০৫১ বর্গ মাইল। মোট জনসংখ্যা ( Total Population ) ৬১১৩০৭০৩। জনঘনত্ব ( Population Density ) হলো প্রতি বর্গ কি.মি.তে ৩২২ জন। প্রতি ১০০০ পুরুষে নারীর সংখ্যা ৯৬৮ জন ( Sex Ratio of Male and Female )। সাক্ষরতার ( Percentage of Literacy ) হার ৭৫.৪৫%। প্রধান সরকারি ভাষা কানাড়া ( Main Official Language is Kannada )। অন্যান্য প্রচলিত ভাষাগুলি হল ইংরেজি, তামিল, তেলুগু এবং হিন্দি। মাথাপিছু রোজগার ( Per Head / Per Capita Annual Income ) ২১০৮৮৭ টাকা। এখানকার মানুষদের বলা হয় কানাডিগাস বা কানাড়িগারু ( Kannadigas / Kannadigaru )।

AVERAGE WEATHER OR CLIMATE. WHEN SHOULD YOU GO THERE? / BEST TIME TO VISIT OR TRAVEL THIS STATE:-

             এখানকার গড় আবহাওয়া আমার মতো অনেকেরই খুব পছন্দের। শীত বা গ্রীষ্ম কোনটারই প্রাবল্য নেই। মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত তাপমাত্রা থাকে ২০° থেকে ৩৫° সেলসিয়াসের মধ্যে। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষাকাল। কর্ণাটকের পশ্চিম অংশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু, ব্যাঙ্গালোর সমেত পূর্ব অংশে বৃষ্টিপাত অনেকটাই কম। অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত সময়ই ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত মরশুম। ভারতের  এই আদ্রতম রাজ্যটি সব দিক থেকে উন্নত মানের।

Karnataka ( Kannada ) Government Official Portal - https://www.karnataka.gov.in

Tourism Department ( KSTDC ) Web Address - (1) https://www.kstdc.co
(2) https://www.karnatakatourism.org

                    মোট জেলা আছে ৩০টি ( Total Number of Districts is 30 )। যথা - বাগলকোট ( Bagalkot ), বেল্লারী ( Ballari ), ব্যাঙ্গালোর গ্রামীণ ( Bengaluru Rural ), বেঙ্গালুরু শহর ( Bangalore Urban ), বেলগাও ( Belgaum ), বিদার ( Bidar ), বিজয়াপুরা ( Vijayapura ), চামরাজানগর ( Chamarajanagar ), চিক্কাবল্লাপুর ( Chikkaballapur ), চিকমাগালুর ( Chikmagalur ), চিত্রদুর্গ ( Chitradurga ), দক্ষিণ কানাড়া ( Dakshina Kannada ), দাভানাগেরে ( Davanagere ), ধারওয়ার ( Dharwad ), গদগ্ ( Gadag ), হাসান ( Hassan ), হাভেরি ( Haveri ), গুলবর্গা ( Gulbarga ), কোডাগু ( Kodagu ), কোলার ( Kolar ), কোপ্পাল ( Koppal ), মান্ডিয়া ( Mandya ), মহীশূর ( Mysore / Mysuru ), রায়চুর ( Raichur ), রামনগর ( Ramanagara ), সিমোগা ( Shimoga ), টুমকুর ( Tumakuru ), উদুপি ( Udupi ), উত্তর কানাড়া ( Uttar Kannada ), ইয়াদগির ( Yadgir )।

ALL TOTAL LIST OF 19 VERY BIG, MOST POPULAR OR FAMOUS LOCAL FAIRS & MAJOR FESTIVALS:-

(i) Ugadi, (ii) Ganesh Chaturthi, (iii) Dussehra, (iv) Hampi Festival, (v) Gowri Fest, (vi) Karaga Festival, (vii) Karnataka Rajyotsava, (viii) Pattadakal Dance Utsav, (ix) Vara Mahalakshmi Pooja, (x) Makar Sankranti / Pongal, (xi) Mahamatakabhisheka at Shravanabelagola, (xii) Kambala Utsav, (xiii) Vairamundi / Vairamudi Brahmotsava, (xiv) Tula Sankramana, (xv) Sri Vithappa Fair, (xvi) Ground Nut Festival, (xvii) Vaikuntha Ekadashi, (xviii) Ayudha Pooja, (xix) Naga Panchami.

এই রাজ্যের যেকোন জায়গায় যাওয়া আসা, থাকা খাওয়ার ব্যাপারে আগে থাকতে অনলাইন বুকিং-এর জন্য নীচের বিশ্বস্ত ওয়েবসাইটগুলির মধ্যে এক বা একাধিক ব্যবহার করতে পারেন। [ FOR ONLINE BOOKING OF FOODS / FLIGHTS, TRAIN / RAILWAY RESERVATION, HOUSES ON RENT/ FLATS RENTAL / LODGES / RESORTS / HOMESTAYS / TENTS / HOTELS ROOMS IN ANY PLACE WITH DISCOUNT, CHEAP AIR TICKETS, BUS BOOKING, CAR HIRE ]:-
1. https://www.trivago.in
2. https://www.goibibo.com
3. https://www.makemytrip.com
4. https://www.yatra.com
5. https://www.cleartrip.com
6. https://www.tripadvisor.in
7. https://www.ixigo.com
8. https://www.zomato.com

TOP PLACES TO VISIT OR MAJOR TOURIST ATTRACTIONS IN KARNATAKA WITH PROPER TOUR PLAN ON MAIN TRAVEL DESTINATIONS AND OTHER NEAREST BEAUTIFUL SPOTS:-

ব্যাঙ্গালোর ( Bangalore / Bengaluru ) - এই রাজ্যের রাজধানীকে ভারতের The Garden City বলা হয়। পৃথিবীর সেরা পাঁচ উদ্যান নগরীর মধ্যে এটি অন্যতম। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯২০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই স্থানের জলবায়ু অত্যন্ত মনোরম। চওড়া রাজপথ, পার্ক, রাস্তার পাশের সবুজ গাছপালা, বাংলো বাড়ি নিয়ে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা এই শহরে সবকিছুতেই নান্দনিক সৌন্দর্যের ছাপ রয়েছে। তবে, বর্তমানে খালি জায়গার অভাবের কারণে বেশ কয়েক বছর আগে থেকে এখানে গগনচুম্বী বাড়ির সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। ইংরেজ আমলে গরমের হাত থেকে রক্ষা পেতে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির ব্রিটিশ কর্তারা এখানে আসতেন। আর এখন সারা ভারতের অর্থশালী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তাঁদের বিলাসবহুল স্বপ্নের বাড়ি বানাতে ও ব্যবসাবাণিজ্যের কারনে এই শহরে আসছেন। কম্পিউটার ও প্রযুক্তি বিজ্ঞানে উচ্চ শিক্ষার্থে সারা দেশের যুবক-যুবতীরা এখানে আসছেন। সাহিত্য-সংস্কৃতি, কর্মদক্ষতায় কেতাদুরস্ত পাশ্চাত্যের প্রভাবে প্রভাবিত এখানকার বাসিন্দারা দেশের সেরা। মুখ্য ভাষা কানাড়া হলেও ইংরেজি ও হিন্দির যথেষ্ট ভালো চলন রয়েছে। শীত বা গ্রীষ্ম কোনটাই প্রবল নয়। বছরভর নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া। এই ধরনের জলবায়ু প্রযুক্তি শিল্প সহায়ক। তাই এখানে ইলেকট্রনিক শিল্প, কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার শিল্প ও আরো বেশ কয়েকটি বৃহৎ শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে। ভারত আজ বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় কম্পিউটার সফটওয়্যার রপ্তানিকারক দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে ব্যাঙ্গালোরের সৌজন্যে। অনেকে একে ইলেকট্রনিক শহর হিসেবে জানেন ( Known as Electronic City )। স্বাধীনতার পরেই পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু The City of The Future বলে আখ্যা দেন। কফি ও সিল্ক বস্ত্রের সারা বিশ্বে যথেষ্ট কদর রয়েছে। তবে, গত কয়েক বছর ধরে পানীয় জলের অভাব যথেষ্ট প্রকট হচ্ছে। বাতাসও ক্রমশঃ দূষিত হচ্ছে।

ব্যাঙ্গালোর প্রাসাদ ( Bangalore Palace, Vasanth Nagar ) - শহরের প্রাণকেন্দ্র বসন্ত নগরে এই অনুপম প্রাসাদটি অবস্থিত। ব্রিটিশ টিউডরি স্থাপত্যশৈলীতে উইন্ডসর ক্যাসেলের অনুপ্রেরণায় ওদিয়ার রাজা ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে এটি নির্মাণ করেন। অ্যামিউজমেন্ট পার্ক রয়েছে ও আউটডোর কনসার্টের ব্যবস্থা করা হয় নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের পরে জনসাধারণের প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার সাথে সাথে।

কুব্বন বা জয়চামারাজেন্দ্র উদ্যান ( Cubbon or Joyachamarajendra Park ) - ঠিকানা হলো Kasturba Road, Behind High Court of Karnataka Ambedkar Veedhi, Sampangi Rama Nagara, Bengaluru, Karnataka - 560001. এই শহরের মরুদ্যান ও মূল আকর্ষণ বলা হয় লর্ড কুব্বনের হাতে ৩০০ একর জমির উপরে গড়া এই পার্কটি। প্রকৃতিপ্রেমী, ভ্রমণকারী ও শিশুদের স্বর্গ বলা হয় একে। রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড থেকে পূর্বে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরত্বে এই অতি মনোরম জায়গাটি রয়েছে। গথিক শৈলীর লালরঙের শেষাদ্রি আয়ার মেমোরিয়াল ( Sheshadri Iyer Memorial Hall ) হলে জনসাধারণের জন্য একটি গ্রন্থাগার আছে। এছাড়া, মিউজিয়াম, জওহর বালভবন, শিশু উদ্যানসহ বিনোদনের আরও অনেক কিছু ব্যবস্থা আছে। ঘোড়া ছুটছে, টয় ট্রেন চলছে। আর প্রতি রবিবার সন্ধ্যায় ফোয়ারা ও ব্যান্ড অর্কেস্ট্রা আলাদা একটা আকর্ষণের দাবি রাখে। সোমবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল সাড়ে আটটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে সবার জন্য। তবে, বর্তমানে এর নামবদল হয়েছে। এখন নাম হয়েছে জয়াচামারাজেন্দ্র পার্ক। জওহর বালভবনে ( Jawahar Bal Bhavan ) ২০ মিলিয়ন বছরের পুরনো ফসিল বৃক্ষসহ বিনোদনের নানা ব্যবস্থা রয়েছে। এর ঠিক পাশেই আছে হিরের আকৃতির দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মাছের অ্যাকোয়ারিয়ামটি ( Government Aquarium )। এখানে চাইলে দাম দিয়ে মাছের স্বাদও গ্রহণ করতে পারেন। প্রতি মঙ্গলবার ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া অন্যান্য দিন সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা অবধি খোলা রাখা হয় দর্শক সাধারণের জন্য। জওহরলাল নেহেরু প্ল্যানেটরিয়ামে ( Jawaharlal Nehru Planetarium, Sankey Road ) সোমবার বাদে প্রত্যেকদিন নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী কানাড়া ও ইংরেজি ধারাভাষ্য সহযোগে বিভিন্ন প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এর ঠিক বিপরীতে আছে আর একটি সুন্দর দেখার জায়গাা, যার নাম হলো ইন্দিরা গান্ধী মিউজিক্যাল ফাউন্টেন পার্ক ( Indira Gandhi Musical Fountain Park )। এই পার্কের আর এক সম্পদ হলো ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত গভর্নমেন্ট মিউজিয়াম ( Government Museum )। এখানকার ১৮ টি গ্যালারিতে হ্যালেবিদ, বিজয় নগর ও ৫০০০ বছরেরও প্রাচীন মহেঞ্জোদাড়োর ভাস্কর্য, প্রাচীন মুদ্রা ও শিলালিপির প্রচুর সংগ্রহ প্রদর্শিত হচ্ছে। পাশের ভেঙ্কটাপ্পা আর্ট গ্যালারিতে ( Venkatappa Art Gallery ) বিভিন্ন সময়ে আঁকা ছবি, প্লাস্টার অফ প্যারিসের নানা জিনিস, কাঠের তৈরি সুন্দর ভাস্কর্যের সম্ভার এককথায় অতুলনীয়। সোমবার ও অন্যান্য সরকারি ছুটির দিন বাদে রোজ সকাল দশটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত খোলা থাকে।

চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের কাছে কস্তুরবা রোডে অবস্থিত বিশ্বেশ্বরায়া টেকনোলজি এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল মিউজিয়াম ( Address - Visvesvaraya Industrial & Technological Museum, Near Chinna Swamy Stadium, Kasturba Rd, Ambedkar Veedhi, Bengaluru, Karnataka - 560001 ) আর একটি দর্শনীয় স্থান। এখানে এসে মডেল দিয়ে প্রদর্শিত মানবকল্যাণে ও শিল্পে বিজ্ঞানের প্রয়োগ দেখে নিন। ২৬ শে জানুয়ারি ও ১৫ ই আগস্ট বাদ দিয়ে প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৬ টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয় জনসাধারণের জন্য। পাশের ট্রেড সেন্টারে (Trade Centre) সারা বছর ধরে কর্ণাটকে তৈরি নানা পণ্যদ্রব্যের প্রদর্শনী চলে।

গ্রানাইট পাথরে নির্মিত দ্রাবিড়ীয় ভাস্কর্যশৈলীর গনতন্ত্রের মূর্ত প্রতীক বিধান সৌধটি ( Suvarna Vidhana Soudha ) কুব্বনের উত্তর-পশ্চিমে ডক্টর আম্বেদকর রোডের বিপরীতে অবস্থিত। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে তৈরি হওয়া এই ইমারতের আয়তন ৫০৫০০০ বর্গ ফুট। ক্যাবিনেট রুমের বিশাল দরজাটি চন্দন কাঠের। এখানেই রাজ্যের বিধানসভা অধিবেশন বসে। এটি ৪৬ মিটার উঁচু ও ৪ তলা বিশিষ্ট। রবিবার ও ছুটির দিনগুলোতে পুরো সৌধটি সুন্দর আলোকসজ্জায় সজ্জিত হয়। অন্যান্য কাজের দিনে সেক্রেটারির অনুমতি নিয়ে এর কিছুটা অংশ বিশেষ করে জমকালো গম্বুজটি দেখে নিতে পারেন বিকেল ৩টা থেকে ৫-৩০টার মধ্যে। এর ঠিক বিপরীতে রাজপথের উল্টোদিকে রয়েছে ১৮৬৮ সালে ইট-পাথর দিয়ে তৈরি করা লালরঙের দ্বিতল আট্টারা কাছারি বা হাইকোর্ট ভবনটি ( High Court of Karnataka )। এর পাশে আছে গথিক শৈলীর স্টেট সেন্ট্রাল লাইব্রেরি ( State Central Library )। পোস্ট অফিস অর্থাৎ GPO বিল্ডিং-এর গঠনশৈলীও এককথায় অতুলনীয়। সিটি বাসস্ট্যান্ড থেকে বেশ কয়েকটি রুটের বাস যাচ্ছে কুব্বনের এবং বিধানসভার সামনে দিয়ে। কাছেই শিবাজী নগর এলাকা।

উদ্যানের উত্তর-পূর্ব দিকে পান্না-সবুজ জলের উলসুর লেকে ( Halasuru / Ulsoor Lake ) সাঁতার ও বোটিং করবেন। খুব সুন্দর অনুভূতি হবে। লেকে অনেকগুলি ছোট ছোট দ্বীপ আছে। গনেশ চতুর্থীর দেবতা গণেশ এবং প্রবাসী বাঙালিদের দুর্গাপূজার দেবী দুর্গার বিসর্জনও দেওয়া হয় এই জলে। কুমারা পার্কের পশ্চিমে কর্নাটক ফোক আর্ট মিউজিয়ামে ( Karnataka Chitrakala Parishath Folk Art Museum, Kumara Park West ) লোক শিল্পের নানা নিদর্শন দেখে নিন। শহরের পর্যটন আকর্ষণের নবতম সংযোজন হলো শিবোহম শিব মন্দির ( Shivoham Shiva Temple, Old Airport Road )। ওল্ড এয়ারপোর্ট রোডের এই পবিত্র মন্দিরে কৃত্রিম কৈলাশ পর্বতে স্থাপিত ৬০ ফুট উচ্চতার বিশ্বের উচ্চতম শিবমূর্তিটি দর্শন করতে ভুলবেন না। ভাস্কর কে. কাশীনাথ এটি তৈরি করেন। শৃঙ্গেরী মঠের শঙ্করাচার্য এই মূর্তিটি উন্মোচন করেন ১৯৯৫ সালের শিবরাত্রির দিন।

লালবাগ বোটানিক্যাল গার্ডেন ( Lalbagh Botanical Garden ) - একে দক্ষিণ শহরতলির প্রমোদ উদ্যানও বলা হয়। ২৪০ একরের এই বাগিচা সৃষ্টি হয় ১৭৪০ খ্রিস্টাব্দে হায়দার আলির হাতে। কাজ পুরোপুরি সম্পূর্ণ হয় তাঁর পুত্র টিপু সুলতানের রাজত্বকালে। আর ১৯ শতকে বৃটিশ শাসকেরা এর আধুনিকীকরণ ঘটান। নামের অর্থ হল লাল গোলাপের বাগ বা বাগান। পারস্য, ফ্রান্স, আফগানিস্তান থেকে আনা বৃক্ষ সহ ১৮০০ প্রজাতির গাছের দেখা পাবেন এই স্থানে। এখানে দেখার মতো অনেক কিছুই আছে। যেমন, ১৮৯০ সালে নির্মিত গ্লাস হাউস (Glass House) অর্থাৎ বিবাহবাসর, ঝরণা (Fountain), কৃত্রিম হ্রদ ( Lake), পদ্ম পুকুর (Lotus Pond), গোলাপ বাগান (Rose Garden), মৃগদাব (Deer Park), ক্যাকটাস ঘর (Cactus House), Greenhouse Garden, Japanese Garden, National Horticulture Mission, Ganesha Temple, Bird Observatory and Sun Dial Park, Tree Fossil, Floral Clock, Kempegowda Watch Tower etc. ব্যাটারি চালিত ফুলঘড়িটি দেখলে চোখ জুড়িয়ে যাবে। Flora Clock-টি একদম সঠিক সময়ই প্রদর্শন করে। ২৬শে জানুয়ারি ও ১৫ই আগস্ট এই গার্ডেন চত্বরে ফুল ও বৃক্ষ প্রদর্শনী (Flower and Plant Exhibition ) অনুষ্ঠিত হয়। ১৫৩৭ খ্রিস্টাব্দে কেম্পেগৌড়ার তৈরি করা চারের এক ওয়াচ টাওয়ারটি অবশ্যই দেখবেন। সিটি বাসস্ট্যান্ড থেকে লালবাগে যাওয়ার অনেক বাস পেয়ে যাবেন। প্রত্যেকদিন সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত প্রবেশের অনুমতি পাওয়া যায়। কাছেই রয়েছে শ্রীরামকৃষ্ণ মঠ (Shri Ramakrishna Math Ashrama)। শহরের আর একটি নতুন আকর্ষণ হল ৭ একর জমির উপর বহু কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হরেকৃষ্ণ টিলার উপরে ইসকনের কৃষ্ণ মন্দির (Iskcon Krishna Temple, Hare Krishna Hill)।

দূর্গ ( Bangalore Fort ) - বিজয়নগর রাজাদের কাছ থেকে জমি দান হিসেবে পেয়ে ইয়েলাহাঙ্কা প্রভু গোষ্ঠীর কেম্পেগৌড়া করদ রাজ্যের সৃষ্টি। প্রথমে এটি তৈরি হয়েছিল মাটি দিয়ে। এই দূর্গ হওয়ার পরেই এই নগরের পত্তন হয়। ১৮ শতকে টিপু সুলতানের পিতা হায়দার আলি এটিকে পাথর দিয়ে পুনর্গঠন করেন। টিপুর হাতেও এটির সংস্কার হয়। আর ধ্বংস হয় ইংরেজদের হাতে। এখানে আসলে সেই অতীতকালের একটি কাল্পনিক ছবি মনে অনুভব করতে পারবেন। সেই প্রাচীনকালের কালহস্তেশ্বর অর্থাৎ সিদ্ধিদাতা গণপতি মন্দিরটি দর্শন হবে।

টিপু সুলতানের গ্রীষ্মাবাস ( Tipu Sultan's Summer Palace ) - ব্যাঙ্গালোর দূর্গের দক্ষিণে সিটি মার্কেটের কাছে কৃষ্ণরাজেন্দ্র ও অ্যালবার্ট ভিক্টর রোডের সংযোগস্থলে টিপুর সামার প্যালেসটি অবস্থিত। কাঠ ও পাথর দিয়ে নির্মিত এই প্রাসাদের নাম রস্ক-ই-জন্নত। এটির নির্মাণ হায়দার আলির হাতে শুরু হয়ে শেষ হয় টিপুর হাতে। কাঠের অংশগুলির কারুকার্য আভিজাত্যের সাক্ষ্য বহন করে। অবহেলায় এটি আজ ধ্বংসের মুখে। উচিত হবে টিপু সুলতানের শৌর্যের সাক্ষী মিউজিয়ামটি দেখে নেওয়া।

এর খুব কাছেই রয়েছে ৩০০ বছরেরও প্রাচীন ভেঙ্কটরমণস্বামী মন্দির ( Venkataramana Swamy Temple )। এটি দ্রাবিড়ীয় গঠনশৈলীতে নির্মিত। এর গোপুরমটি আধুনিক, তৈরি হয়েছে ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে। বিপরীত পাথরের থামে তৃতীয় মহীশূর যুদ্ধের কামানের গোলার ক্ষতচিহ্ন আর একটি দর্শনীয় বস্তু।

বুল মন্দির ( Bull Mandir - The Temple of Nandi Dev ) - শহর থেকে কিছুটা দক্ষিণে বাগল পাহাড়ের বাসবানাগুড়িতে ( Basavanagudi, Bugle Hill ) শিবের অনুচর নন্দীদেবের এই প্রসিদ্ধ মন্দিরটি অবস্থিত। কেম্পেগৌড়ার তৈরি দ্রাবিড়ীয় শৈলীর এই দেবালয়টি শহরের প্রাচীনতম। আরাধ্য দেবতার মনোলিথিক মূর্তিটি গ্রানাইট ও চারকোল মিশিয়ে তৈরি। স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস যে, নন্দীর আকার ক্রমশঃ বাড়ছে। পার্শ্বস্থ গণেশ মন্দিরটিও দেখে নিন। এখানকার গণপতির মূর্তিটি ১১০ কেজি মাখন জমিয়ে তৈরি হয়েছে। প্রতি চার বছর অন্তর নতুন করে আরাধ্য দেবতা মাখন দিয়ে নির্মাণ করা হয়। ৪০০ মিটার পশ্চিমে চারপাশ পর্যবেক্ষণের জন্য কেম্পেগৌড়ার তৈরি করা ৪টি ওয়াচ টাওয়ারের একটি এখনও টিকে রয়েছে। সিটি বাসস্ট্যান্ড থেকে বেশ কয়েকটি রুটের বাস দর্শনার্থীদের এই পবিত্র স্থানে নিয়মিত যাতায়াত করাচ্ছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার প্রবেশের অধিকার আছে।

বুল টেম্পলের উত্তর-পশ্চিমে রয়েছে কেম্পেগৌড়ার তৈরি করা অনবদ্য শ্রীগাভী গঙ্গাধারেশ্বর গুহা মন্দির ( Shrigavi Gangadhareshwar Cave Temple )। চারটি মনোলিথিক স্তম্ভের গুহামন্দিরটির আরাধ্য দেবতা অগ্নি এবং এই সুপ্রাচীন মন্দিরটি জ্যোতির্বিদ্যা ও সুন্দর স্থাপত্যশৈলীর জন্য বিখ্যাত। মকরসংক্রান্তিতে পাথরের নন্দীমূর্তির সিং-এর মধ্য দিয়ে সূর্যরশ্মি গিয়ে গর্ভগৃহ আলোকিত করে। দেশ-বিদেশের অসংখ্য পূণ্যার্থী আসেন জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি মকরসংক্রান্তির পূণ্যতিথিতে।

ব্যাঙ্গালোর থেকে ৫৫ কি. মি. দূরে দক্ষিণ-পশ্চিমে মহীশূরের রাস্তায় Janapada Loha Folk Arts Museum - এ গিয়ে কর্ণাটকীয় সংস্কৃতি দেখে আসুন। শহর থেকে ৩২ কিলোমিটার পশ্চিমে কর্ণাটকী নৃত্যশিল্পীদের গ্রাম Nrityagram Dance Village - এ গিয়ে ভারতীয় নৃত্যকলা ব্যাখ্যাসহ প্রদর্শনী টিকিট কেটে দেখে নিন। সম্ভবতঃ সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত এই Dance Show অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

নন্দী হিলস ( Nandi Hills ) - শহর থেকে ৬০ কি. মি. উত্তরে মহীশূরের রাস্তায় ১৪৭৮ মিটার উঁচুতে অবস্থিত মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের পাহাড়ি শহর এটি। দেবাদিদেব মহাদেবের প্রধান সঙ্গী নন্দীর নামাঙ্কিত স্থান। দাক্ষিণাত্যের লোকেরা অনেকে একে নন্দীগিরি বা নন্দীদূর্গাও বলে থাকেন। কয়েক দিন নিভৃতে ছুটি কাটানোর আদর্শ জায়গা। চিক্কাবাল্লাপুর রাজার গড়া দূর্গের চারপাশের নৈসর্গিক সৌন্দর্যে প্রলুব্ধ হয়ে টিপু সুলতানও এখানে তাঁর গ্রীষ্মাবাস গড়ে তোলেন। নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া, স্বাস্থ্যকর জলবায়ু এখানে আসার উপরি পাওনা। ব্রিটিশরাও নন্দী পাহাড়ে আস্তানা গাড়েন। বাণরাজার রানীর তৈরি করা দুটি প্রাচীন শিব মন্দিরও আছে। একটি বাসস্ট্যান্ডের মাথায় টিপুর সামার প্যালেসের নীচে আর দ্বিতীয়টিতে পাহাড় চড়ে উপরে যেতে হবে। পাশের অমৃত সরোবর ও ঝরণা থেকে পেনার, পালার ও চিত্রাবতী নদী বেড়িয়ে এসেছে। পাহাড় চূড়ায় রয়েছে চোল রাজাদের সময়ের যোগনন্দীশ্বর শিব মন্দির ( Yoganandiswara Shiva Temple )। বিজয়নগর রাজাদের সময়েও কিছু সংযুক্তি ঘটে এই মন্দিরে। এরপর টিপুর উপাসনা হল ও টিপুর ড্রপ দেখে নিন। Tipu's Drop হলো এমন একটি ভয়ঙ্কর ৬০০ মিটার উঁচু খাড়া পাহাড়ের উপরের জায়গা, যেখান থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদিদের ফেলে দেওয়া হতো। জায়গাটির ইতিহাস ভয়ঙ্কর হলেও চারপাশের প্যানোরামিক দৃশ্য দেখে আপনি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে যাবেন। এছাড়া আছে টিপুর হারেম মানে জেনানা মহল, চোল সাম্রাজ্যের অনেক মন্দির। শুনলে অবাক হবেন যে ভারতে এখন যত ইউক্যালিপটাস গাছ দেখেন তা প্রথম লাগানো হয়েছিল এই নন্দী পাহাড়ে। টিপু সুলতানই প্রথম ব্যক্তি যিনি নিজে উদ্যোগী হয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে এই ঔষধি বৃক্ষ আনিয়েছিলেন। সম্ভব হলে একসাথে এম. বিশ্বেশ্বরায়ার জন্মভূমি মুদেনাহাল্লি ( Muddenahalli - The Birthplace of M. Visveswaray ) বেড়িয়ে আসুন। নন্দী হিলসে ্ থাকতে হলে বাসস্ট্যান্ড ও পাহাড় চূড়ায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেকগুলি সরকারি-বেসরকারি হোটেল, লজ, গেস্ট হাউস, রিসর্ট ইত্যাদি রয়েছে, পছন্দসই যেখানে খুশি থাকতে পারবেন। কর্তৃপক্ষের আতিথেয়তা ও যত্নআত্তিতে মুগ্ধ হয়ে যাবেন।

শহর থেকে প্রায় ৩০ কি. মি. দূরে একটি দারুণ সুন্দর পিকনিক স্পট আছে, তার নাম রামোহাল্লী ( Ramohalli Picnic Spot )। এই জায়গার বিশেষ আকর্ষণ হলো একটি সুপ্রাচীন বটবৃক্ষ। একটি ৪০০ বছর পুরনো বটগাছ প্রায় তিন একর জায়গা জুড়ে শাখাপ্রশাখা ছড়িয়ে দাড়িয়ে রয়েছে। ব্যাঙ্গালোর থেকে মহীশূরের রাস্তা ধরে কেনগেরি ( Kengeri ) পৌঁছে বাস পাল্টে পাল্টে চলে যান। সিটি মার্কেট থেকে সরাসরি রামোহাল্লী ( এই শব্দটির অর্থ হল বিশাল বটগাছ ) যাওয়ার বাস পেয়ে যাবেন।

উদ্যান নগরীর থেকে প্রায় ৬০ কি. মি. দূরত্বে স্বল্প উচ্চতা বিশিষ্ট একটি সুন্দর শৈল শহর হলো শিবগঙ্গা ( Shivagange Hill Station )। এটি সপ্তাহান্তে ছুটি কাটানো এবং ট্রেকিং-এর জন্য আদর্শ জায়গা। চারপাশের মনোরম পরিবেশ, দুটি মন্দির, ঝরণা ও পাতালগঙ্গা প্রস্রবণের জন্য এই পাহাড়ি শহরটি বিখ্যাত।

বেঙ্গালুরু থেকে প্রায় ৩৭ কি. মি. দূরে অর্কাবতী নদীতে বাঁধ দিয়ে চামরাজাসাগর অর্থাৎ থিপ্পাগুন্ডনাহাল্লি কৃত্রিম জলাধার ( Thippagondanahalli Reservoir on Arkavathi River ) তৈরি করা হয়েছে। মেগাসিটির পানীয় জল আসছে এখান থেকে। পিকনিক করার আদর্শ জায়গা। কিন্তু, এই সুন্দর স্থান ঘুরে দেখতে গেলে আপনাকে Chief Engineer, BWSSB, Cauvery Bhavan, Bangalore - 9 থেকে সরকারি অনুমতি নিয়ে আসতে হবে। অর্কাবতী লেকের ( Arkavathi Lake ) জলে বোটিং ও মাছ ধরার সুবন্দোবস্ত আছে। শহরের খুব কাছের আর এক দ্রষ্টব্য হলো হেসারাঘাট্টা হ্রদ ( Hesaraghatta Lake )।

৩৬ কি. মি. দূরের দেবানাহাল্লিতে ( Devanahalli - The Birthplace of Tipu Sultan ) গিয়ে টিপুর জন্মস্থান দর্শন করে আসুন। স্মৃতিচিহ্নরূপে মনুমেন্ট ও দূর্গ রয়েছে। এখানে অবস্থিত দ্রাবিড়ীয়শৈলীর বেণুগোপাল মন্দিরটি অবশ্যই দেখবেন। ৪৪ কিলোমিটার দূরত্বের মাগাডি ( Magadi - The Birthplace of Kempegauda ) আর এক ভ্রমণ গন্তব্য। এটি কেম্পেগৌড়ার জন্মভূমি। অপূর্ব ভাস্কর্য মন্ডিত বেশকিছু প্রাচীন মন্দির আছে। যেমন - সোমেশ্বর, রামেশ্বর, গঙ্গাধারেশ্বর, বীরভদ্র ইত্যাদি মন্দিরসমূহ। রামনগর জেলার আর একটি ভ্রমণস্থান হলো রামনগরম ( Ramanagaram )। এখানে রক ক্লাইম্বিং-এর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। খুব সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ। কিন্তু, এই গ্রামটি বিশ্ববিখ্যাত হিন্দি সিনেমা শোলের শ্যুটিং স্পট ( Ramnagar is World Famous as Shooting Spot of Hindi Superhit Film Sholay ) হিসেবে।

কিভাবে পৌঁছবেন? How to Reach or Go?

                   দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে এক্সপ্রেস ট্রেনের মাধ্যমে সহজেই এখানে যেতে পারবেন। এছাড়া, দেশ-বিদেশের অনেক বড়ো ও মাঝারি বিমান বন্দরের সাথে Bengaluru International Airport-এর সরাসরি বা ভায়া বিমান যোগাযোগ রয়েছে। আন্তরাজ্য বাস পরিবহনের সাহায্যে পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলি থেকে এই শহরে খুব সহজে আসা যাবে।

কোথায় থাকবেন? Where to Stay?

                     সিটি রেল স্টেশন ও সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাল একদম মুখোমুখি। এর পাশে রয়েছে কেম্পেগৌড়া সার্কেল। এই পুরো এলাকা জুড়ে সাধারণ মানের কম দামের হোটেল-লজ-গেস্ট হাউসের ছড়াছড়ি। তেমনি কুব্বন পার্কের পূর্ব দিক ও আশপাশে পেয়ে যাবেন অনেক স্টার ক্যাটাগরির হোটেল ও রেস্তোরাঁ। আপনার পছন্দ ও ক্ষমতা অনুযায়ী যেখানে খুশি থাকতে পারেন।

এখান থেকে কি কি কিনবেন? What are The Things You Should Buy ( Marketing ) While Traveling Here?

                     ভ্রমণের স্মৃতিচিহ্নস্বরূপ এখান থেকে কফি, চন্দন কাঠ ও চন্দনজাত বিভিন্ন সামগ্রী, সিল্ক শাড়ি, জুয়েলারী, আইভরির নানা জিনিস, লোকাল ওয়াইন, বেকারির চকোলেট ইত্যাদি কিনে নিয়ে যেতে পারেন। মহাত্মা গান্ধী রোডের Cauvery Arts and Crafts Emporium থেকে কিনতে পারেন। এছাড়া রয়েছে সিটি মার্কেট, রাসেল মার্কেট, গুপ্তা মার্কেট অথবা এম. জি. রোড, ব্রিগেড রোড, কমার্শিয়াল রোডের বিভিন্ন দোকানপাট থেকেও মার্কেটিং করা যেতে পারে। কর্নাটকী সিল্ক বস্ত্রের জন্য আমার পছন্দসই জায়গাগুলির মধ্যে কয়েকটি হলো - (1) Mysore Silk Showroom, Leo Complex, M. G. Road, (2) Government Emporium, M. G. Road, (3) Karnataka Silk Industries Corporation, Gupta Market, Kempe Gowda Road, (4) Vijayalakshmi Silk Kendra, Kempe Gowda Road ইত্যাদি।

কনডাকটেড ট্যুর প্রোগ্রাম ( Conducted Tour Programme Packages ) - এই শহরসহ পুরো কর্নাটক ও পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির বিভিন্ন বিখ্যাত ভ্রমণস্থল ঘুরিয়ে দেখাবার জন্য সরকারি ট্যুরিজম বিভাগ ও রেলস্টেশন-বাসস্ট্যান্ডের আশেপাশে অনেক ভালো মানের ট্রাভেল এজেন্সি বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজ ট্যুরের অফার দিয়ে থাকেন। আপনার পছন্দসই জায়গা থেকে বুকিং করে ঘুরে নিতে পারেন। প্যাকেজের মধ্যে থাকা-খাওয়া যুক্ত থাকে। রাজ্য ট্যুরিজম বিভাগের বুকিং ঠিকানাটি হলো - Karnataka State Tourism Development Corporation Limited, 2nd Floor, Khanija Bhavan ( West Side ) 49, Race Course Road, Bangalore - 560001, Tel - 22352901-03 - এই Booking Address -এ Contact করে নিন। এদের সেন্ট্রাল বুকিং ঠিকানা - KSTDC, Badami House, N. R. Square, Bengaluru - 560002, Ph. - 43344334/4337/08970650070. এখান থেকে গাড়িও ছাড়ছে।

জনপ্রিয় খাবারদাবার ( Popular Foods ) - এখানকার রেস্টুরেন্টে ( Restaurants ) ও ফাস্ট ফুডস্টলে ( Fast Food Stalls ) নানা ধরনের সুস্বাদু খাবার ( Tasty Foods ) খুব সহজেই পাওয়া যায়। রেলস্টেশন, চিঙ্গেলপেট, গান্ধীনগরের হোটেলগুলোতে নানাধরনের দক্ষিণ ভারতীয় নিরামিষ খাবার চেখে দেখতে পারেন। গান্ধীনগরের Kamath Hotel-এর Udipi Cafe বা রেলস্টেশনের বিপরীতে Hotel Kadamba তে দক্ষিণ ভারতীয় জনপ্রিয় থালি "বিসি বেলে বাত" মানে গরম ভাত ডাল খেতে পারেন। বাদামি হাউসের কাছে অবস্থিত Dai Vihar-এর যথেষ্ট সুনাম আছে দক্ষিণ ভারতীয় খাদ্যের ব্যাপারে। মহাত্মা গান্ধী রোডের হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলিতে দেশি-বিদেশি যেকোন সুস্বাদু খাবার পেয়ে যাবেন। চীনা ও তিব্বতী খাবার চেখে দেখতে হলে দলাই লামার বোনের হোটেল Rice Bowl-এ চলে যান। স্ন্যাক্স, লস্যি ও আইসক্রিমের স্বাদ নিতে এম. জি. রোডের Chit Chat বা Lake View-তে আসুন। শিবাজী নগরের Taj, Noor-র চিকেন-মটন বিরিয়ানি বিখ্যাত। M. G. Road-র India Coffee House-এর সুখ্যাতি কফি ও টিফিনের জন্য। ফাস্ট ফুড ও পিৎজার কারণে Cunningham Road-এর Pizza Hut ও Spencer's Super Market-এর Spencer's Cafe-র নাম অবশ্যই নিতে হবে। যাই খান না কেন ব্যাঙ্গালোরের নিজস্ব খাবার মধুর বড়া ( Madur Vada ) না খেলে এখানে ঘুরতে আসাই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। এখানকার বেশিরভাগ হোটেল ও ফুডস্টলে এই খাবারটি পেয়ে যাবেন। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Please, Don't Spam.

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷